বিশ্বরূপ অধিকারী, আমাদের ভারত, মুর্শিদাবাদ, ১২ সেপ্টেম্বর: মুর্শিদাবাদ জেলায় গঙ্গা ভাঙ্গন দীর্ঘদিনের সমস্যা। দীর্ঘদিন ধরে এই নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। গঙ্গা ভাঙ্গনকে জাতীয় বিপর্যয় হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। প্রত্যেক বছর টাকা বরাদ্দের কথাও শোনা যায়, কিন্তু নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধের সুরাহা মেলে না। গঙ্গার তিনটি গতি উচ্চগতি, মধ্যগতি ও নিম্নগতি। নিম্নগতি রাজমহল পাহাড় থেকে মোহনা অর্থাৎ বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত। মুর্শিদাবাদ জেলা গঙ্গার নিম্ন গতিতে অবস্থিত হওয়ায় পলি জমে নদীতে ছোট ছোট দ্বীপ অর্থাৎ চড়ার সৃষ্টি হয়েছে নদীর মধ্যবর্তী জায়গায়। ফলে নদীর নাব্যতা হারিয়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলার সামসেরগঞ্জের ধানঘড়া, শিবপুর, প্রতাপগঞ্জ এলাকায় নদী ভাঙ্গন বিশেষ করে সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্যাপকহারে দেখা দিয়েছে।
মুর্শিদাবাদ জেলার সামসেরগঞ্জ থানার নিমতিতা গ্রাম পঞ্চায়েতের ধানঘড়া ও হিরানন্দপুর গ্রামের সঙ্গে শিবপুর এলাকা নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে সর্বহারা এখন গ্রামের মানুষ।
এই অভিশপ্ত নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছিল ১৪ আগস্ট ২০২০ থেকে। একের পর এক নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে কারো চাষের জমি, কারো ভিটেমাটি আবার কারো মাথা গোঁজার মতো ঠাঁই টুকুও হারিয়ে গিয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ধানঘড়ার পরিবারগুলো। ইতিমধ্যে অনেকের বাড়ি গঙ্গার অতলে তলিয়ে গেছে এবং অনেকে বাড়ি খালি করে খুলে নিয়েছে ইঁট, জানালা, দরজা।
এই নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ করতে নদীর মধ্যবর্তী দ্বীপগুলো ড্রিলিং করে মাটি নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা দরকার। দরকার নদীর ধারে পাথর, কংক্রিট দিয়ে বাঁধানো। তবেই নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা যাবে বলে অনেকে মনে করেন।
এলাকাবাসীদের আর্জি সরকারের কাছে গঙ্গা ভাঙ্গনের চিরস্থায়ী সমাধানের। বিশ্বের বেশিরভাগ শহরগুলো নদীর তীরেই অবস্থিত। বিজ্ঞানভিত্তিক উপায়ে সেগুলো হওয়ায় ভাঙ্গনের কথা শোনা যায় না, বরং নদী শহরের সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি পায়। তাই নদী ভাঙ্গনে দরকার স্থায়ী সমাধান। যদিও গত বৃস্পতিবারের পরে তেমন ভাবে ভাঙ্গন দেখা যায়নি।