সুকন্যা চ্যাটার্জি, কলকাতা, ২০ এপ্রিল:
বৈশাখী অমাবস্যা তিথিতে শ্রীচৈতন্য-পার্ষদ শ্রীল গদাধর পণ্ডিতের পুণ্য আবির্ভাব দিবস। এবছর তা পড়েছে আজ ২০ এপ্রিল। আবির্ভাব তিথির প্রাক্কালে পূর্বদিন অধিবাস সন্ধ্যায়, ১৯ এপ্রিল একটি অনলাইন কার্যক্রমের আয়োজনে করে ‘দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির’।
এই অনলাইন অনুষ্ঠানে প্রভু গদাধরের পুণ্যজীবন ও লীলা মাহাত্ম্য বর্ণনা করেন মহানাম সম্প্রদায়ের সম্পাদক তথা কলকাতা মহাউদ্ধারণ মঠের বিশিষ্ট সন্ন্যাসী ও লেখক শ্রীমৎ বন্ধুগৌরব ব্রহ্মচারী এবং ইস্কন মায়াপুরের মুখ্য সমন্বয়ক শ্রী জগদার্তিহা দাস। বিশেষ আকর্ষণ ছিল বিশিষ্ট শিল্পী শীর্ষ আচার্যের অঙ্কন প্রদর্শন। তিনি অধ্যয়নরত গদাধর পণ্ডিতের একটি ব্যতিক্রমী ছবি আঁকেন এবং দর্শক ও শ্রোতামণ্ডলীর প্রভূত প্রশংসা লাভ করেন। পরে তাঁর আঁকা ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।
গৌরলীলার পঞ্চতত্ত্বের অন্যতম তত্ত্ব গদাধর পণ্ডিত। তিনি শ্রীচৈতন্যের অতীব প্রিয়পাত্র ছিলেন। শ্রী মাধব মিশ্র এবং শ্রীমতী রত্নাবতী দেবীর দিব্য সন্তান তিনি, বাণীনাথ তাঁর দাদা। নবদ্বীপ, মতান্তরে শ্রীহট্টে গদাধরের জন্ম পঞ্চদশ শতকে আটের দশকের শেষে। বয়সে তিনি শ্রীচৈতন্যদেবের চাইতে এক বা তিন-চার বছরের ছোটো। শ্রীচৈতন্যদেবের আবির্ভাব ১৪৮৬ সালে। ছোটোবেলা থেকেই গদাধরের মধ্যে বিশেষ গৌর-অনুরাগ পরিলক্ষিত হয়। তিনি গৌরাঙ্গকে সর্বদা আগলে রাখতেন, সবসময় তাঁর কাছাকাছিই থাকতেন। সেবায়, ভালোবাসায় ভরিয়ে রেখেছিলেন প্রভু চৈতন্যদেবকে। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত গৌরলীলায় পুণ্য অবগাহন করে ধন্য হয়েছিলেন তিনি, ধন্য করেছিলেন বৈষ্ণব ভক্তবৃন্দকে।
সভার শেষপর্বে ছিল গদাধর প্রভু সম্পর্কে প্রশ্নোত্তর পর্ব। ভক্তবৃন্দের নানান প্রশ্নের উত্তর দেন শ্রীমৎ বন্ধুগৌরব ব্রহ্মচারী। দর্শকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বহু কৃতবিদ্য বৈষ্ণব ভক্তমণ্ডলী এবং প্রবুদ্ধজন। উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট গবেষক ড. রীতা ভট্টাচার্য এবং গদাধর পণ্ডিতের প্রতি নিবেদিতপ্রাণা শ্রীমতী কুঞ্জশ্রী দাশগুপ্ত। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন অঙ্কিতা চৌধুরী। কুঞ্জশ্রী দেবী গৌড়ীয় পদাবলীর মাধুর্য্য পরিবেশন করে অনুষ্ঠানের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলেন। সভার শেষে ‘দেশের মাটি’-র পক্ষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অসীমলাল মুখার্জি।