পাহাড় থেকে সমতল, তৃণমূল কংগ্রেসের শিক্ষক সংগঠন ছাড়ার হিড়িক সর্বত্র

পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৭ ডিসেম্বর: ২০২১- এর পরিবর্তনের পরে নতুন শিক্ষামন্ত্রী আসার পর থেকেই শিক্ষক সমিতির পুরনো সংগঠনকে সাইডলাইন করার চেষ্টা শুরু হয়। এই পদক্ষেপে চূড়ান্ত শীলমোহর পড়ে, শিক্ষা সেলের রাজ্য সভাপতির পদ থেকে অশোক রুদ্রের অপসারণের সঙ্গে সঙ্গেই। নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা সক্রিয় না হওয়ায় ও সর্বস্তরের পুরনো দায়িত্বপ্রাপ্তদের নিষ্ক্রিয় করার ঘোষণার পর প্রায় একবছর কোনো কর্মসূচি ও পদক্ষেপ করতে দেখা যায়নি তৃণমূল শিক্ষা সেলকে। রাজ্যজুড়ে পঞ্চায়েত ভোটের সময় নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় থাকা শিক্ষক সংগঠনের লোকসভা নির্বাচনেও আদৌও কোনো ভূমিকা দলের তরফে থাকবে কিনা সে সম্পর্কে সন্দিহান রাজ্যের শিক্ষক সমাজ। এছাড়াও শিক্ষক সমাজের জীবিকা সংক্রান্ত সমস্যাগুলি তুলে ধরা ও তার প্রতিকার করার জন্য সংগঠনের কোনো সহযোগিতা না থাকায় সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে শাসক দলের সংগঠন।

সম্প্রতি দার্জিলিং জেলার শিক্ষা সেলের সভাপতি অশোক বিশ্ব, শাসকদলের সংগঠন ছেড়ে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতন্ত্রিক মোর্চায় যোগদান করেন, কালিম্পং জেলার সভাপতি প্রকাশ কাঠেল ও সহগামী হন দুই জেলার হাজার শিক্ষক শিক্ষিকাকে নিয়ে। প্রবীন নেতৃবৃন্দের ভরসায় না থেকে পুরুলিয়া ও নদিয়াতে দল ছাড়ে জেলা নেতাদের একাংশ। কংগ্রেসের শিক্ষা সেলে ডানপন্থী শিক্ষকরা গেলেও মূল সদস্য বাড়ছে সিপিএমের শিক্ষক সংগঠন এবিপিটিএ ও রামবাম শিক্ষক সমিতি উস্থির। এই দুই শিক্ষক সমিতির তরফে রাজ্যজুড়ে ২০০৬- এর নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের জীবিকার সমস্যা নিয়ে আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ও তৃণমূল শিক্ষক সমিতির এই সংক্রান্ত কোনো পদক্ষেপ না থাকায় রাজ্যজুড়ে বিরোধী সংগঠনের সাথে শিক্ষক শিক্ষিকাদের যোগসূত্র তৈরি হচ্ছে দ্রুত।

২০১৮-১৯ এ এই সংগঠন গুলোকে পথে নেমে রাজ্যজুড়ে কর্মসূচি করে ঠেকিয়েছিলেন সেই সময়ের দলের রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র। তার নেতৃত্বেই দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় ২০২১ বিধানসভার নির্বাচনের আগে সংগঠনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তবে আবার দলের সদর দফতরে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্রকে শিক্ষক সংগঠনের তরফে বসতে বলায় রাজ্যজুড়ে শিক্ষক সমাজের মধ্যে নতুন উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *