Modi, Election, পেহেলগাঁও থেকে মুর্শিদাবাদ, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি থেকে নারী নিরাপত্তা, ২৬- এর ভোট প্রচারের সুর বাঁধলেন মোদী

আমাদের ভারত, ২৯ মে: ২৬- এর বিধানসভা নির্বাচনের আর এক বছর বাকি। এই আবহে রাজ্যে এসে নির্বাচনী প্রচারের দামামা বাজিয়ে দিয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কোন কোন ইস্যুতে রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে প্রচারে নামতে হবে তা নিয়ে দলের নেতা কর্মীদের দিশা দেখিয়ে দিয়ে গেলেন। তাই আলিপুরদুয়ারের জনসভায় রাখা মোদীর বক্তব্যে পেহেলগাঁও- এর ঘটনা, অপারেশন সিঁদুর যেমন ছিল তেমনি মুর্শিদাবাদ হিংসা, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে রাজ্যের নারী নিরাপত্তার মতো জলন্ত ইস্যুতে সরব হন প্রধানমন্ত্রী।

মুর্শিদাবাদের ঘটনার প্রসঙ্গ দিয়েই একরকম বক্তব্য শুরু করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে নির্মম সরকার বলে কটাক্ষ করেন মোদী। তিনি বলেন, “মুর্শিদাবাদ ও মালদায় যা হয়েছে তা বর্তমান সরকারের নির্মমতার উদাহরণ। এখানকার সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত, তাই প্রতিবার আদালতকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এভাবে কি কোনো সরকার চলতে পারে?

রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে বিজেপি বরাবরই দুর্নীতির ইস্যুতে সরব। আজ সেই দুর্নীতিকে ভোট প্রচারের মূল অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “তৃণমূল নেতাদের দুর্নীতির জন্য এখানকার শিশুদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হচ্ছে, কিন্তু এরা নিজেদের ভুল মানতেই চাইছেন না। উল্টে এরা আদালতকে আক্রমণ করছেন। তৃণমূল সরকার অভিযুক্তদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে, বিজেপি এটা হতে দেবে না।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলায় মারাত্মক দুর্নীতি চলছে। এখানকার শাসক দল গরিব মানুষের প্রাপ্য ছিনিয়ে নিতে চাইছে। বাংলা অনেকগুলি সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। হিংসা, অরাজকতা, নারী নির্যাতন, গরিবদের উপর অত্যাচার, কর্মহীনতার দুর্নীতি। তাঁর দাবি, এখানে গরিবদের অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে রাজনীতি করছে শাসক দল তৃণমূল।

তাঁর কথায়, “দুর্নীতির প্রভাব সরাসরি গরিব মানুষের ওপরেই পড়ে, তার উদাহরণ দেখলাম শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে। এই সরকার হাজার হাজার শিক্ষককে অসহায় করে দিল। তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ঠেলে দিল। এটা কেবল হাজার শিক্ষকের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলা নয়, বরং রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ছেলেখেলা করা হয়েছে। এত বড় পাপ তৃণমূল নেতারা করল, আর অদ্ভুতভাবে এরা নিজেদের দোষ মানছে না, উল্টে আদালতকে দোষী বলছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চা বাগানের শ্রমিকদেরও ছাড়েনি তৃণমূল। এই সরকারের দুর্নীতির জন্য চা বাগান বন্ধ হচ্ছে। চা-শ্রমিকদের হাতে কাজ নেই। এখানকার শ্রমিকদের পিএফ নিয়ে যা ঘটেছে তা লজ্জার।

অন্যদিকে কেন্দ্রের অনেক বড় বড় প্রকল্প এই রাজ্যে কার্যকর করা হয় না বলেও সরব হন মোদী। তিনি বলেন, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প এখানে চালু হতে দেওয়া হয়নি। এখানকার লোকেরা বাইরে গেলেও এই প্রকল্পের সুবিধা পান না। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় পশ্চিমবঙ্গের বহু মানুষ বাড়ি পেতে পারতেন, কিন্তু এখানে তা হতে দেওয়া হল না। তা করতে দিল না এখানকার নির্মম সরকার।

মোদী বলেন, আদিবাসীদের কথা ভাবে না তৃণমূল সরকার। তাই কেন্দ্রীয় প্রকল্প পিএম জন্ম যোজনা এখানে লাগু হতে দেয়নি রাজ্য সরকার। যখন এক আদিবাসী মহিলাকে রাষ্ট্রপতি করার কথা ভাবা হয়েছিল তখন প্রথম তৃণমূল তার বিরোধিতা করেছিল। “তিনি বলেন, এখানে গরিব মানুষকে তার প্রাপ্য টাকা দেওয়া হচ্ছে না। তৃণমূল সরকার দোষীদের বাঁচাচ্ছে। বিজেপি এটা হতে দেবে না। রাজনীতি নিজের জায়গায়, কিন্তু গরিব, দলিত, পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মহিলাদের সঙ্গে কেন রাজনীতি করছে তৃণমূল?

প্রধানমন্ত্রী জানান, নীতি আয়োগের বৈঠকে গরিব মানুষের বিষয়ে আলোচনা হয়, কিন্তু বাংলার সরকার সেখানে উপস্থিতই ছিল না। সব দলের নেতারা ছিল। আমরা সবাই মিলে আলোচনা করেছি এই গম্ভীর ইস্যুতে, অথচ তৃণমূল ২৪ ঘন্টা রাজনীতি করতে ব্যস্ত।

পেহেলগাঁও- এর ঘটনা প্রসঙ্গে আলিপুরদুয়ার থেকেও পাকিস্তানকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মোদী। তিনি বলেন, যে জঙ্গিরা পেহেলগাঁও -এর ঘটনা ঘটিয়েছে, যারা দেশের মা- বোনের সিঁদুর মোছার চেষ্টা করছে, তাদের সিঁদুরের শক্তি বুঝিয়ে দিয়েছে ভারতীয় সেনারা। যা হয়েছে সেটা কল্পনাও করতে পারেনি পাকিস্তান। তাঁর দাবি, অপারেশন সিঁদুর এখনো শেষ হয়নি। তিনবার ঘরে ঢুকে মেরেছি। হামলা হলে শত্রুদের আবার বড় মূল্য দিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *