BJP, Freedom fighter, বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় এলে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের যথাযোগ্য স্বীকৃতির আশ্বাস

আমাদের ভারত, ১১ আগস্ট: “২০২৬ সালের রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এলে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের উত্তরাধিকার সংরক্ষণ ও তাঁদের নামে বাস্তবসম্মত কর্মসূচি গ্রহণ করাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।” সোমবার বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ সল্টলেক কার্যালয়ে আয়োজিত এক বিশেষ সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা বলেন রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র দেবজিৎ সরকার।

তিনি বিপ্লবী, স্বাধীনতা সংগ্রামী ক্ষুদিরাম বসুর মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ক্ষুদিরাম বসুকে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের “প্রথম শহিদ” হিসেবে অভিহিত করে আশ্বাস দেন যে ক্ষুদিরাম বসু থেকে শুরু করে বাংলার প্রতিটি বিপ্লবীর স্মৃতি নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে এবং তাঁদের ত্যাগকে কোনোদিনও বিস্মৃত হতে দেওয়া হবে না।

দেবজিৎবাবু বলেন, “ক্ষুদিরাম বসু ছিলেন এক অদম্য সাহসিকতার প্রতীক, যাঁর ত্যাগ ও বীরত্ব যুগ যুগ ধরে বাঙালির গর্বের অংশ হয়ে আছে। ভারতীয় জনতা পার্টির প্রদেশ কার্যালয় সহ সকল মন্ডল কার্যালয়েও আজকের দিনটি আমরা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জায়গায় জায়গায় শহিদ স্মরণ করছি।”

তিনি তৃণমূলকে তীব্র কটাক্ষ করে বলেন, “এই রাজ্যে নবী দিবস পালন হতে পারে, কিন্তু ক্ষুদিরামের জন্মদিন বা মৃত্যু দিনকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয় না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন স্কুলগুলিতে পালিত হয়। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ তাদের জন্মদিন গায়ের জোরে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর।”

দেবজিৎ সরকার তীব্র আক্রমণ করেন পশ্চিমবঙ্গের পূর্ববর্তী সরকারগুলির বিরুদ্ধে—বিশেষত ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট শাসন এবং বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) সরকারের প্রতি। তিনি বলেন, “এই সরকারগুলি ধারাবাহিকভাবে বাংলার মহান বিপ্লবীদের উত্তরাধিকারকে অবহেলা করে ইতিহাসের পাতায় তাঁদের যথাযোগ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত করেছে।

ক্ষুদিরাম বসু, বাঘা যতীন, মাস্টারদা সূর্য সেন প্রমুখ যাঁরা ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিয়ে দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, তাঁদের স্মরণ আজ শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতার পর্যায়ে নেমে এসেছে। তিনি বলেন, বাংলার শহিদদের সঙ্গে তৃণমূল যেন এক প্রকার যুদ্ধ ঘোষণা করে ২১ জুলাই দিনটিকে শহিদ দিবস ঘোষণা করেছে। শহিদদের স্মরণ না করে একুশে জুলাইকে সামনে এনেছে এবং সেটিকেই বৃহৎ আকারে উদযাপন করেছে। অপরদিকে ভারতীয় জনতা পার্টি বরাবর সশস্ত্র বিপ্লবকে সম্মান করেছে এবং বিপ্লবীদের পূজা করেছে।”

দেবজিৎ সরকার বিশেষভাবে বলেন, “টিএমসি সরকার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরার বদলে নিজেদের রাজনৈতিক প্রচারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিপূজায় বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। শহিদ স্মরণ দিবস ও অন্যান্য জাতীয় অনুষ্ঠানে বিপ্লবীদের স্মৃতিচারণ সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে ‘ফটো-সেশন’ ও ‘শিরোনাম তৈরি করা’র মধ্যে।”

সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ হিসেবে দেবজিৎবাবু বলেন, “বর্তমান সরকারের আমলে স্নাতক স্তর পর্যন্ত কিছু ইতিহাস বইয়ে সশস্ত্র বিপ্লবীদের ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এটি একটি গভীর বিদেশি ষড়যন্ত্র, যার উদ্দেশ্য হলো ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অবদানকে খাটো করা এবং বাঙালির আত্মপরিচয়কে আঘাত করা। তিনি একে বাঙালি সত্ত্বা ও জাতীয় গৌরবের প্রতি চরম অপমান বলে আখ্যা দেন।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *