পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ সেপ্টেম্বর: নিয়োগ দুর্নীতির একাধিক মামলায় নাজেহাল রাজ্য সরকার। গ্রেপ্তার হয়েছেন খোদ রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী সহ শাসক দলের একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি। পাশাপাশি পুরো শিক্ষা দফতরটাই জেলে। সিবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে একাধিক নাম। একাধিক তদন্তে উঠে এসেছে কি ভাবে দালাল চক্রের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা তোলা হয়েছে চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে। আদালতের নির্দেশে চাকরি গেছে বহু শিক্ষকের। আবার লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়েও মেলেনি চাকরি। সেই টাকা ফেরত পায়নি বহু চাকরি প্রার্থী। এমনি এক চঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠলো পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মোহনপুর থানার পারোই গ্রামের বাসিন্দা কালিপদ পতি ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে। ২০১৪ সাল থেকে প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি করে দেওয়ার নাম করে কয়েকশো কোটি টাকা তোলার অভিযোগ উঠলো কালিপদ পতির বিরুদ্ধে। প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বিক্রি করতেন কালিপদ পতি ও তার সহযোগিরা এমনটা অভিযোগ এনেছেন এলাকার বহু চাকরিপ্রার্থীরা। বহু বেকার যুবক- যুবতী কোটি কোটি টাকা দিয়েও পায়নি চাকরি। এই দালাল চক্রের মধ্যে নিত্যানন্দ দত্ত, হারু দত্ত, আরতি দত্ত, প্রণব নন্দী, শঙ্কু দে, বিজু বারিক, অরবিন্দ বেলজির মতো বেশ কিছু নাম সামনে এসেছে। যারা এলাকা থেকে দালাল চক্রের মাধ্যমে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে প্রায় ২ হাজার মানুষের কাছ থেকে কয়েকশো কোটি টাকা প্রতারণা করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতি সামনে আসার পর কালিপদ পতি ও তার সহযোগীরা এলাকা থেকে পলাতক। এদিন সকালে এলাকার প্রায় ১০০ জন চাকরিপ্রার্থী নিত্যানন্দ দত্ত, কালিপদ পতি ও তার সহযোগিদের বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায়। টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে কালিপদ পতি, নিত্যানন্দ দত্ত ও তার সহযোগিদের বাড়ির সামনে ধর্ণা দেয় চাকরিপ্রার্থীরা। চাকরিপ্রার্থীদের দেখেই ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয় কালিপদ পতি, নিত্যানন্দ দত্ত ও তার সহযোগিদের পরিবারের লোকেরা। টাকা ফেরতের দাবিতে রেগে ক্ষোভে ফেটে পড়েন চাকরি প্রার্থীরা। পরে এবিষয়ে মোহনপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দিতে গেলে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে পুলিশ এমনটাই অভিযোগ চাকরি প্রার্থীদের। উল্টে পুলিশ তাদেরকেই ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগীতার অভিযোগ আনেন চাকরি প্রার্থীরা। এতো বড়ো প্রতারণার পরেও পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কেন সে বিষয়ে একাধিক অভিযোগ উঠছে।
পাশাপাশি এই খবর করতে গেলে এদিন মোহনপুর থানার কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিকরা সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে বলে অভিযোগ। ফোনও কেড়ে নেয়। অবশেষে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সুপারকে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিকদের লিখিত অভিযোগ করতে বলেন। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদমাধ্যমকে যদি পুলিশি হয়রানির স্বীকার হতে হয়, তাহলে সাধারণ মানুষকে কী নাজেহাল অবস্থার স্বীকার হতে হয়? তা নিয়েই পুলিশের বিরুদ্ধে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। তবে চাকরি প্রার্থীরা কি আদৌও টাকা ফেরত পাবে? না কি বার বার পুলিশি হয়রানির স্বীকার হতে হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।