স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদিয়া, ২১ এপ্রিল:
বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিজেদের ব্যাঙ্ক কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে কয়েকশো অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে। টাকা ফেরতের দাবিতে এদিন তাদের আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাল স্থানীয়রা। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার শান্তিপুর থানার বেলঘড়িয়া এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।
সূত্রের খবর, নদিয়ার শান্তিপুর থানার বেলঘড়িয়া এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বেলঘড়িয়া গ্রামে ২ দিন ধরে তিন যুবক বাড়ি বাড়ি গিয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে ব্যাংক কর্মীর পরিচয় দিয়ে আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে টাকা তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু গ্রাহকরা যে টাকা তুলেছে পরবর্তীকালে দেখা যাচ্ছে তার থেকে অনেক বেশি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।
এলাকার বাসিন্দা শিবানী সরকার অভিযোগ করেন, আমার ব্যাঙ্কের বইয়ে ৫২৮ টাকা ছিল। আমি ওনাদের বললাম যে ১২৮ টাকা রেখে আমি ৪০০ টাকা তুলব। ওরা আমার কোনও কথাই না শুনে আমাকে বাড়ি থেকে আধার কার্ডের জেরক্স নিয়ে আসতে বলল এবং তারপর টিপ সই দিয়ে ১০০ টাকা হাতে দিয়ে গেল। আমি প্রতিবাদ করলে পরের দিন এসে টাকা দেবো বলে চলে যায়। আজ ৪-৫ দিন পর আবার তারা গ্রামে এসেছে।
সুদীপ রায়ের অভিযোগ, ব্যাংকের নাম করে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে বয়স্ক মানুষদের, পড়াশোনা না জানা মানুষদের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে বোকা বানিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেছে। কারোর ৫০০, কারোর ২০০,কারোর বা ১০ টাকা থেকে শুরু করে যেরকম যার কাছ থেকে পেরেছে কেটে নিয়েছে। কেউ ব্যাংকে গিয়ে বই আপডেট করতে পারছে না তাই বোঝা যাচ্ছে না কার কত টাকা ওরা কেটেছে। আমার টাকাও কেটেছে বুঝতে পারতাম না, যদি না মোবাইলে আমার এসএমএস আসতো। দেশে দুর্যোগ চলছে আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ব্যাংকের নাম ভাঙিয়ে এরা মানুষকে প্রতারিত করছে। এদের কঠিন থেকে কঠিন সাজা হওয়া দরকার।
আজ ওই যুবকরা আবার গ্রামে এলে তাদের আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে স্থানীয়রা। তাদের দাবি, ওই যুবকরা কারচুপি করে তাদের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কারো অ্যাকাউন্ট থেকে খোয়া গেছে ৫০০ টাকা কারো ২০০ টাকা বা ৪০০ টাকা। এই অভিযোগে প্রায় শতাধিক গ্রাহকরা টাকা ফেরতের দাবিতে দীর্ঘক্ষণ তাদের আটকে রাখে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে শান্তিপুর থানার পুলিশ। শান্তিপুর থানার পুলিশ এসে উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে, গ্রাহকরা যাতে টাকা ফেরত পায় তার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ উঠে যায়।
যদিও অভিযুক্ত যুবকদের দাবি, নেটওয়ার্কের সমস্যার জন্য এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। আমরা ইতিমধ্যেই কিছু গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিয়েছি। তবে টাকা কারচুপির কোনো বিষয় নয়। বাকিদের টাকাও আমরা ফেরত দেবো।