সরকারি হোমে আবাসিক কিশোরীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে অভিযুক্ত প্রাক্তন সুপারের আত্মসমর্পণ পুরুলিয়া জেলা আদালতে

সাথী দাস, পুরুলিয়া, ৭ মে: সরকারি হোম আনন্দমঠের আবাসিক নাবালিকাদের উপর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত হোমের প্রাক্তন সুপার আত্মসমর্পণ করলেন পুরুলিয়া জেলা আদালতে। আজ সকালে আনন্দমঠ হোমের প্রাক্তন সুপার সৌমিলী দাস জেলা আদালতের পকসো স্পেশাল কোর্টে আত্মসমর্পণ করেন বলে জানান পকসো স্পেশাল আদালতের সরকারি আইনজীবী নন্দলাল সিংহানিয়া।

পুরুলিয়া শহরের উপকণ্ঠে টামনা থানার অন্তর্গত শিমুলিয়া গ্রামের অদূরে আনন্দমঠ জুভেনাইল হোম। এই হোমে প্রায় ৪৯ জন আবাসিক নাবালিকা রয়েছে। বিভিন্ন ঘটনার সাথে জড়িয়ে পড়া নাবালিকাদের আদালতের নির্দেশে এই হোমে আশ্রয় দেওয়া হয়। মুক্তিও পায় আদালতের নির্দেশে। গত ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসের এই হোমের নাবালিকারা জেলা আদালতের বিচারকের কাছে তাদের করুণ কাহিনীর কথা জানায়। তাতে তারা অভিযোগ করেন, হোমের মধ্যে একজন ‘শিশির কাকু’, অন্যজন আনন্দমঠ হোমের সুপার, আরও একজন অপরিচিত অভিযুক্তের নাম তারা বলতে পারেনি – এই ৩ জন হোমের নাবালিকাদের উপর ওই হোমের মধ্যেই শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। এই অভিযোগ পাওয়ার পরেই জেলা আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক হোমে তদন্তে যান। ওই তদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দেন জেলা আদালতের প্রধান বিচারকের কাছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই জেলা আদালতের প্রধান বিচারক জেলার পুলিশ সুপারকে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দেন।জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে সদর মহিলা থানা ২০২০ সালের ২৫ ডিসেম্বর একটি অভিযোগ দায়ের করে। তার ভিত্তিতেই মামলা শুরু হয়। সামাজিক সুরক্ষা দফতরের করণিক শিশির মাহাতো (শিশির কাকু) ও ওই হোমের তৎকালীন সুপার সৌমিলী দাসের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা পড়ে। অভিযুক্ত হোমের সুপার সৌমিলী দাস প্রথমে কলকাতা উচ্চ আদালত এবং পরে সুপ্রিম কোর্টে জামিনের আবেদন জানান। সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি রাজ্যের ডিজির কাছে জানতে চান কেন অভিযুক্ত হোমের সুপারকে গ্রেফতার করা হয়নি এবং পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ আনেন। হলফনামা দিয়ে জানাতে বলেন।

অভিযুক্ত হোমের প্রাক্তন সুপার সৌমিলী দাস আজ জেলা আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক পকসো স্পেশাল কোর্টে আত্মসমর্পণ করেন। বিচারক অভিযুক্তের আগামী ২০ মে পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। অপর অভিযুক্ত শিশির মাহাতো কলকাতা উচ্চ আদালতের জামিনের জন্য আবেদন করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *