আমাদের ভারত, ৮ আগস্ট: চলে গেলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। পশ্চিমবঙ্গের বাম জমানার শেষ মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। ২০০০ থেকে ২০১১ সাল টানা ১১ বছর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার সকাল আটটা কুড়ি নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন তার সন্তান সুচেতন ভট্টাচার্য। সকাল বেলায় প্রাতরাশ করার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পাম এভিনিউ- এর বাড়িতেই প্রয়াত হন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
গত বছর ৯ আগস্ট হাসপাতাল থেকে বিপদমুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ২৯ জুলাই আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ভর্তি করা হয়েছিল দক্ষিণ কলকাতার আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। বেশ কয়েকদিন তাকে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রেখেছিলেন চিকিৎসকরা। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। ফুসফুস ও শ্বাসনালীতে মারাত্মক সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। মূলত আচ্ছন্ন অবস্থাতেই ছিলেন হাসপাতালে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তবে ক্রমশ লড়াই করে চিকিৎসায় সাড়া দেন তিনি। বারো দিনের মাথায় বাড়ি ফিরে যান প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তারপর থেকেই কড়া বিধি-নিষেদের মধ্যে ছিলেন তিনি।
দীর্ঘদিন ধরে গুরুতর শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন বুদ্ধদেববাবু। অসুস্থতার কারণে শেষ কয়েক বছর গৃহবন্দি ছিলেন। এর আগেও একাধিক বার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে তিনি। ২০২০- তে ও প্রবল শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে ছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত লড়াই করে বাড়ি ফিরেছিলেন।
এমনকি ২০২১- এর মাঝামাঝিতে কোভিডেও আক্রান্ত হয়েছিলেন অবস্থা অবনতি হওয়ায় তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য। একসাথে কোভিড নেগেটিভ হয়ে দু’জনে বাড়ি ফেরেন।
২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সংবাদ শিরোনামে আবার ফিরে এসেছিলেন পদ্মভূষণ প্রত্যাখ্যানকে কেন্দ্র করে। কেন্দ্র সরকার তার নাম মনোনিত করলেও তিনি এই সম্মান নিতে অস্বীকার করেন। বুদ্ধদেবের ১১ বছরের শাসনকালে শেষ পাঁচ বছর বাংলা রাজনীতিতে নানা দিক থেকে সরগরম ছিল। রাজনৈতিক উত্তাপের কারণ ছিল তার শিল্পায়ন নীতিকে ঘিরে। শিল্পায়ন নীতিকে ধরেই তিনি এগোতে চাইলেও জমি অধিগ্রহণের পদ্ধতি নিয়ে উত্তাল হয় রাজ্য। ২০০৬ সালে ২৩৫ আসন নিয়ে বিরাট জয় সঙ্গে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন কিন্তু ১১-তেই বড় পরাজয়ের মুখে পড়তে হয় বামেদের। আর ২০১১- তে অবসান হয়ে যায় বাম শাসনের।