বন্যপ্রাণ সংরক্ষণে বনদপ্তরের কর্মশালা মেদিনীপুরের হিজলিতে

আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৮ অক্টোবর:
হাতিদের উত্যক্ত করা এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণী শিকার করার প্রবনতায় লাগাম টানতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্যের বনদপ্তর। শনিবার পশ্চিমবঙ্গ বনবিভাগের উদ্যোগে মেদিনীপুরের হিজলিতে হাতি সহ অন্যান্য বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

বন বিভাগের “স্টেট ফরেস্ট ট্রেনিং ইনস্টিটিউট” এই কর্মশালার আয়োজন করে। রাজ্যের পশ্চিম চক্রের মুখ্য বনপাল ডঃ অশোক প্রতাপ সিং এই কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো, জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ নেপাল সিংহ সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যাক্তিগণ। কর্মশালায় যোগ দিয়ে ডেবরার বিধায়ক হুমায়ুন কবীর সহ মুখ্য বনপাল ও বন বিভাগের অন্যান্য আধিকারিকরা বন্যপ্রাণীদের উত্ত্যক্ত করা এবং মেরে ফেলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তা বন্ধ করার আবেদন জানান এবং বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের বিষয়ে পরামর্শ দেন।

শুক্রবার সকালে গোয়ালতোড় ব্লকের দুধপাতরী গ্রামের ভেতর দিয়ে স্থানীয়দের দেওয়া রামলাল নামের একটি শান্ত স্বভাবের রেসিডেন্সিয়াল হাতি পেরিয়ে যাচ্ছিল। গ্রামবাসীরা ভিড় করে হাতিটিকে ঘিরে সেলফি তোলার সময় কয়েকজন লেজে টেনে উত্ত্যক্ত করছিল। দীর্ঘক্ষণ এভাবে চলার পর উত্তেজিত হাতিটি হঠাৎ বাঁক নিয়ে মাধব মল্ল নামে এক ব্যক্তিকে আছাড় মেরে মেরে ফেলে।

শান্ত স্বভাবের এরকম একাধিক রেসিডেন্সিয়াল হাতি সারা বছর ধরে পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন জঙ্গলে ঘুরে বেড়ায়। মাঝেমধ্যে তারা মাঠের ফসলের ক্ষতি করলেও ঘরবাড়ি ভেঙ্গে ফেলা কিম্বা মানুষের ওপর আক্রমণ চালানোর প্রবণতা তাদের নেই বললেই চলে। স্বভাবসিদ্ধ ভাবে তারা লোকালয়ে চলে এলে হাতিকে ঘিরে ভিড় জমতে থাকে। এলাকাবাসীদের মধ্যে শুরু হয়ে যায় সেলফি তোলার উন্মাদনা। সেই সঙ্গে চলে লেজ ধরে টানাটানি এবং ঢিল ছোড়া। এই সময় উত্তেজিত হয়ে হাতিরা ঘরবাড়ি ভেঙ্গে ফেলে এবং প্রাণহানি পর্যন্ত ঘটায়। এইসব বন্ধ করতে এবং বন্যপ্রাণীদের প্রতি সহানুভূতিশীল মানসিকতা প্রদর্শনের বিষয়ে কর্মশালায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *