পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, ঝাড়গ্রাম, ৬ অক্টোবর: সিকিম বেড়াতে গিয়ে নিখোঁজ ঝাড়গ্রামের একই পরিবারের পাঁচজন। পরিবারের অন্য সদস্যরা তাকিয়ে রয়েছে টিভির পর্দার দিকে। ঝাড়গ্রাম শহরের ৩ নাম্বার ওয়ার্ডের গাইঘাটা এলাকার রথ পরিবারের দুই ছেলে শুভদীপ রথ ও অপূর্ব রথ এবং দুই বৌমা সুপ্রিয়া রথ ও নীলা রথ, নাতি অর্নেষ রথ মোট ৫ জন সিকিমে বেড়াতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে এমনই দাবি করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। শুভদীপ রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল পদে কর্তব্যরত।

জানা গিয়েছে, চলতি মাসের ১ তারিখ বিকেল ৪টের সময় বাড়ি থেকে সিকিমের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় তারা। ঝাড়গ্রাম থেকে গাড়িতে করে কলকাতা যায় এবং কলকাতা থেকে ট্রেনে করে নিউ জলপাইগুড়ি। তারপরেই তারা পৌঁছে যায় সিকিম। সিকিমে পৌঁছে যাওয়ার পর পরিবারের সঙ্গে তাদের ফোনে কথা হলে তারা জানায় ঠিকভাবেই পৌঁছে গেছে। ৩ তারিখ রাত্রিবেলা বাড়িতে থাকা বাবা অরুণ কুমার রথ ও মা অলকা রথের সঙ্গে ফোনে দীর্ঘক্ষণ কথা হয়। তারপরের দিন ৪ তারিখ থেকে পরিবারের ৫ সদস্যের সঙ্গে আর কোনো ভাবে যোগাযোগ করতে পারেনি তাদের বাবা-মা। যতবারই তারা ফোন করেছে দুই ছেলে ও দুই বৌমার ফোন বন্ধ পেয়েছে।

৪ তারিখ তারা সংবাদমাধ্যমে জানতে পারে সিকিমে প্রচুর বৃষ্টির কারণে হড়পা বাণে সিকিমে চারিদিকে ধস নেমেছে। সিকিমের বিভিন্ন এলাকা বিধ্বংসী রূপ গ্রহণ করেছে। তারপরেই তারা আরও চিন্তিত হয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। অরুণবাবু বলেন, “সিকিমের একটি ট্যুরিজম সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে আমার দুই ছেলে, বৌমা ও নাতি বেড়ানোর জন্য গিয়েছে। ৩ তারিখ রাতে তাদের সঙ্গে কথা হয়। তারপর ৪ তারিখ থেকে আজ পর্যন্ত কোনো যোগাযোগ নেই। যতবার ফোন করছি ফোন বন্ধ পাচ্ছি। আর সন্ধ্যাবেলায় টিভিতে হেল্পলাইন নাম্বার দেখে রাজ্য হেল্পলাইন এবং সিকিমের সেনাবাহিনীর হেল্প লাইনের সঙ্গে আমি যোগাযোগ করি। তাদেরকে বিষয়টি ইতিমধ্যেই জানিয়েছি এবং আমার ছেলে ও বৌমার ফোন নাম্বার গুলিও তাদেরকে দিয়েছি। প্রশাসনের কাছে আমার একটাই অনুরোধ, আমার পরিবারের সদস্যদের আমার কাছে ফিরিয়ে দিন। যেন কোনভাবে ওদের সঙ্গে যোগাযোগ অন্তত করতে পারি”।

অরুণবাবু আরো জানান, সিকিমে তাদের ৩ দিন বেড়ানোর পর দার্জিলিং-এ দু’দিন বেড়ানোর কথা ছিল। তারপর আগামী রবিবার তাদের ঝাড়গ্রাম ফেরার কথা। কিন্তু তার আগেই তাদের কোনো খোঁজ না মেলায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন অরুণবাবু ও অলকাদেবী। অলকা দেবী বলেন, “টিভিতে সিকিমের বিধ্বংসী অবস্থা দেখার পরে আর কিছুতেই থাকতে পারছি না। বার বার তাদের ফোন করছি, কিন্তু নাম্বার বন্ধ পাচ্ছি। প্রশাসনের কাছে আমার হাতজোড় করে অনুরোধ আমার সন্তান, বৌমা ও নাতির খোঁজ করে দিন”।


