জয় লাহা, দুর্গাপুর, ১০ জুলাই: পাঁচদিন পর অবশেষে নিখোঁজ শিশুর ক্ষতবিক্ষত পচাগলা মৃতদেহ উদ্ধার হল। পরিবারের অভিযোগ, নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবিতে ক্ষোভ এলাকাবাসীদের। রবিবার ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল অন্ডালের কাজোড়ার মাধবপুর কোলিয়ারী এলাকায়।

পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, মৃত শিশুর নাম সৌরভ বাউরী (৭)। মাধবপুর এলাকার বাসিন্দা। তার বাবা সুরজ বাউরী পেশায় ঠিকা শ্রমিক। ঘটনায় জানা গেছে, গত ৬ জুলাই বিকেল নাগাদ বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায় সৌরভ বাউরি নামে ওই শিশু। খেলা শেষে তার বন্ধুরা বাড়ি ফিরে এলেও সৌরভ বাড়ি না ফেরায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে পরিবারের লোকজন। সারারাত খোঁজাখুঁজির পরও তার সন্ধান না পাওয়ায় পরদিন অন্ডাল থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করে। শিশুটিকে খুঁজতে পুলিশি গাফিলাতির অভিযোগে, শুক্রবার নিখোঁজ শিশুর পরিবার ও আত্মীয় স্বজনরা থানায় তুমুল বিক্ষোভ দেখায়।
শেষ পর্যন্ত রবিবার সকালে বাড়ি থেকে প্রায় দু’শো মিটার দূরে জঙ্গল থেকে নিখোঁজ শিশুর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। শরীরে আঘাতের চিহ্ন। পাশাপাশি প্রমাণ লোপাট করতে ক্যামিকেল ঢেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এদিন সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা দেহটি পড়ে থাকতে দেখে অন্ডাল থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরিবারের অভিযোগ, শিশুটিকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।

এদিকে ঘটনার পর ক্ষোভে ফেটে পড়ে এলাকাবাসীরা। তাদের দাবি, অপরাধীরা গ্রেফতার না হলে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ হবে।
প্রশ্ন কি কারণে খুন? স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রাথমিক অনুমান পারিবারিক বিবাদের জেরে খুন হতে পারে। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে অন্ডালের কাজোড়ার কেসিপাল কোলিয়ারি এলাকায় এক মদ্যপ যুবকের হাতে মনু গুরু(৭) নামে এক শিশু খুন হয়। নাতিকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর জখম হয় তার ঠাকুমা বাসন্তী গুরু। ওই মাসই ওই একই এলাকায় পারিবারিক অশান্তির জেরে এক গৃহশিক্ষক তার স্ত্রী ও ছোট মেয়েকে কুপিয়ে খুন করে বলে অভিযোগ ওঠে, এবং থানায় গিয়ে নিজে আত্মসমর্পন করে। ২০২০ সালের ১৬ আগষ্ট বুদবুদের রনডিহা এলাকায় পারিবারিক বিবাদের জেরে সানি বাগদী(৭) নামে এক শিশু খুন হয়। দুদিন পর বাড়ির অদূরে পুকুর পাড়ে বস্তাবন্দি মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তারপর এদিনের ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে, পারিবারিক বিবাদের জেরে শিশুদের ওপর আক্রোশ এবং তাদের খুন হতে হচ্ছে কেন? যদিও এদিন আসানসোল-দুর্গাপুর ডিসি( পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা জানান, “স্নিফার ডগ নিয়ে তদন্ত করা হয়েছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”

