আমাদের ভারত, ব্যারাকপুর, ১২ মার্চ: পানিহাটি
পৌরসভার চেয়ারম্যানকে পদত্যাগ করতে বলে ফিরহাদ হাকিমের ফোন পৌর প্রধানকে। কেন ইস্তফা দিতে হবে তা প্রকাশ্যে জানাক মুখ্যমন্ত্রী, বলে দাবি করলেন পৌর প্রধান।
নির্বাচনকে পাখির চোখ করে তৃণমূলের তরফ থেকে বেশ কিছু ক্ষেত্রে রদ বদলের কথা শোনা যাচ্ছিল। এবার শোনা যাচ্ছে পরিবর্তন হতে পারে পানিহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান। তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্তেই এই রদবদল বলে দলীয় সুত্রের খবর। সূত্রের খবর অনুযায়ী, বর্তমান চেয়ারম্যান মলয় রায় অসুস্থ থাকায় এই পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলের উচ্চ নেতৃত্ব। বর্তমান চেয়ারম্যান মলয় রায়- এর জায়গায় আগামী দুই- এক দিনের মধ্যেই নতুন চেয়ারম্যান হতে চলেছে পানিহাটি পৌরসভায়। এদিন দলের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি নিতে বলা হয়েছে মলয় রায়কে। তবে সিআইসি সোমনাথ দে’র নাম ১ নম্বর তালিকায় আছে পৌরপ্রধানের জন্য বলেও শোনা যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, এদিন পানিহাটি পৌরসভার পৌর প্রধান মলয় রায়’কে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম নিজে ফোন করে পৌর প্রধান পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দেন বলে খবর। তবে মলয়বাবুর শারীরিক অসুস্থতা না অন্য কোনো কারণ রয়েছে এর পেছনে তাই নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। রাজনৈতিক মহলের জল্পনা, পানিহাটি এলাকার ফুসফুস অমরাবতী মাঠ নিয়ে যে জলঘোলা চলছিল সেটা নিয়ে পৌর প্রধানকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ এলাকার মানুষের অভিযোগ ছিল যে, এই মাঠটি জমি হাঙড়দের নজরে পড়েছে। আর এটা ধীরে ধীরে বিক্রি করে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। যা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানে যেতেই তিনি এই মাঠ দ্রুত অধিগ্রহণ করার নির্দেশ দেন। যদিও এই মাঠ নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। কিন্তু এই মাঠ নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল যে, অসাধু চক্রের সাথে হাত মিলিয়ে এই মাঠ স্পোর্টস কমপ্লেক্স করার নামে প্লট করে বিক্রি করে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। মনে করা হচ্ছে এমন খবর চাউর হতেই পৌর প্রধানের গলার কাঁটায় পরিণত হয় এই অমরাবতী মাঠটি।
যদিও পানিহাটি পৌরসভার চেয়ারম্যান মলয় রায় তিনি আপাতত তার পদ থেকে ইস্তফা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন সংবাদ মাধ্যমের সামনে। তিনি এদিন জানান, “ফিরহাদ হাকিম আমাকে ফোন করে পদ ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলেছেন এবং সেটা আজই করার কথা জানিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু আগে আমি দলের কাছে জানতে চাইবো আমার অন্যায়টা কী? তারপরই আমি ইস্তফা দেব। আমি দলের একনিষ্ঠ সৈনিক। দল যা বলে তাই করি, কিন্তু এক্ষেত্রে আমার ভুলটা প্রকাশ্যে আনতে হবে, তারপর আমি ইস্তফার বিচার করবো।”
এদিন তিনি অমরাবতী মাঠ নিয়ে বলেন যে, তিনি ওই মাঠে কোনো অন্যায় হতে দেননি। তিনি দাবি করেন, “আমি ৩৫ বছর ধরে কাউন্সিলর। আমি সব সময় এই পৌর এলাকার মানুষদের পাশে থেকেছি। আমাকে এলাকার মানুষ যখন যেখানে ডেকেছে তখন পেয়েছে। আর অমরাবতী মাঠটি কোনো ভাবেই বিক্রি হয়নি। কারণ ওটা ট্রাস্টের মাঠ, ওটা বিক্রি করা যায় না। আমি সেটা হতেও দিইনি। কিন্তু এই মাঠটা দেখিয়ে আমার সঙ্গে বঞ্চনা করা হচ্ছে। আমি চাই আমাকে খারাপ করার চক্রান্ত চলছে সেটা সকলের সামনে আসুক। আমি ওই অমরাবতী মাঠের একটা ঘাসও বিক্রি করিনি। সেটা করলে আমার জীবন যাত্রায় অনেক পরিবর্তন হতো, বিলাসবহুল হতো, কিন্তু আমি আগের মতই আছি।” তবে এই ঘটনায় আবারো সামনে আসছে তৃণমূলের সেই গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব।