আমাদের ভারত, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, ১৮ জুলাই:বুধবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে কুলতলির চুপড়িঝাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করলো নকল সোনা প্রতারণা চক্রের অন্যতম পাণ্ডা সাদ্দাম সর্দারকে।
জানা গিয়েছে, নকল সোনা প্রতারণা চক্রের অন্যতম পাণ্ডা সাদ্দাম মাছের ভেড়ির চালাঘরে লুকিয়ে ছিল। এদিনও পুলিশকে দেখে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে সে। কিন্তু পুলিশের জালে শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ে যায়। আজ বারুইপুর মহকুমা আদালতে তাকে পেশ করা হয়।
সোমবার হাতের নাগাল থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল সাদ্দাম। তাকে তন্নতন্ন করে খুঁজছিল পুলিশ। অবশেষে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বুধবার রাতে কুলতলির চুপড়িঝাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। সেখানে একটি মাছের ভেড়ির চালাঘরে লুকিয়ে ছিল সোনা পাচার চক্রের মাথা সাদ্দাম। রাত ১ টা ১৫ নাগাদ চালাঘর ঘিরে ফেলে পুলিশ। তখন ঘুমোচ্ছিলেন সাদ্দাম। পুলিশকে দেখেই ফের পালানোর চেষ্টা করে সে। কিন্তু পুলিশ তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। সাদ্দামের আশ্রয়দাতা মান্নান খানকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই মান্নান আবার এলাকার সিপিআইএম নেতা। এখনও পর্যন্ত অধরা সাদ্দামের ভাই সানু সর্দার।
কে এই সাদ্দাম? নামেই সোনার ব্যবসায়ী সাদ্দাম। আসল সোনার মূর্তির ছবি দেখিয়ে নকল মূর্তি বিক্রি থেকে শুরু করে ডাকাতি, নানা কুকীর্তির অভিযোগ রয়েছে সাদ্দামের বিরুদ্ধে। সোমবার থেকেই চর্চায় এই সাদ্দাম। সোনার মূর্তি ও সোনা পাচার চক্রের খোঁজেই কুলতলির পয়তারাহাটে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। সাদ্দামের বাড়ির কাছে পৌঁছতেই পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে গুলি। শুরু হয় ঝামেলা-হট্টগোল। আর এই ফাঁকেই উধাও হয়ে যান সাদ্দাম ও তার ভাই। অভিযোগ, কার্যত পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় সাদ্দামকে। এই অভিযোগে দুই মহিলাকেও গ্রেফতার করে পুলিশ।
পরে সাদ্দামের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েই চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের। শোওয়ার ঘরের খাট সরাতেই বেরিয়ে আসে গোপন সুড়ঙ্গ। কংক্রিটের ওই সুড়ঙ্গ গিয়ে সোজা মিলেছে মাতলা নদীর কাঁকড়া খালে। তদন্তে এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে, বিগত ১৫ বছর ধরে নকল সোনা বিক্রির ব্যবসা করত সাদ্দাম। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই মূলত নকল সোনার মূর্তি বিক্রির টোপ ফেলত। মূল টার্গেট ছিল ব্যবসায়ীরাই। নির্জন জায়গায় ডেকে, নকল মূর্তি দিয়ে বা স্রেফ ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিত সাদ্দাম ও তার শাগরেদরা। ১২ লক্ষ টাকার প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ডাকাতি, রাহাজানি-সহ একাধিক মামলা রয়েছে।
প্রথম থেকেই পুলিশের ধারণা ছিল, সাদ্দাম বেশি দূর পালাতে পারেনি। আশেপাশের সবকটি থানাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাছেও সাদ্দামের ছবি পাঠিয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বুধবার রাতের অভিযানে পুলিশ জালে ধরা পড়ে সাদ্দাম।