রাজেন রায়, কলকাতা, ২৮ সেপ্টেম্বর: ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় জোরকদমে তদন্ত চালাচ্ছেন সিবিআই গোয়েন্দারা। কলকাভা-সহ একাধিক জেলা ঘুরে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করছে সিবিআইয়ের একাধিক দল। ইতিমধ্যেই আদালতে জমা পড়ে গিয়েছে ৪টি চার্জশিট। এবার ৩ মে কোচবিহারের শীতলকুচিতে ভোট পরবর্তী হিংসায় মৃত বিজেপি কর্মী মালিক মৈত্রর ঘটনাতেও জমা পড়ল পঞ্চম চার্জশিট। চার্জশিটে নাম রয়েছে তাহিদুল মিঞা-সহ আরও ৫ জনের। এদের বিরুদ্ধে দেওয়া হল অস্ত্র আইনের ধারাও।
প্রসঙ্গত, বিধানসভা ভোটের সময় চতুর্থ দফার নির্বাচনে ১০ এপ্রিল ভোট চলাকালীন কোচবিহারের মাথাভাঙার
শীতলকুচিতে জোড়সাটকির ১২৬ নম্বর বুধে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছিল। পুলিস-প্রশাসনের রিপোর্ট অনুযায়ী, সেদিন গুজব ছড়িয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের উপর হামলা চালায় উন্মত্ত জনতা। ফলে গুলি চালাতে বাধ্য হয় বুথে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ। এই নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় রাজ্য রাজ্যনীতিতে। আর এই ঘটনার জেরেই ভোটের পরও থামেনি হিংসা। ভোটের ফল বেরনোর পরদিনই ৩ মে মৃত্যু হয় বিজেপি কর্মী মানিক মৈত্রের।
সিবিআই সূত্রের খবর, ঘটনার দিন মানিককে বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী মারধর করে। তারপর গুলি করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁর স্ত্রী দিনহাটা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সিবিআই তদন্তে জানতে পারে, বিজেপি কর্মী ছিলেন মানিক মৈত্র। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, গুলি করে খুন করা হয়েছিল মানিককে। যদিও রাজ্য পুলিসের এফআইআরে তৃণমূল কর্মী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল মানিক মৈত্রকে।
ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় বীরভূমের বাসিন্দা মনোজ জয়সওয়ালের মৃত্যুর ঘটনায় ২ সেপ্টেম্বর প্রথম চার্জশিট জমা করে সিবিআই। ভোটের ফল প্রকাশের পর পরই গত ১৪ মে খুন হন বীরভূমের নলহাটির ব্যবসায়ী মনোজ জয়সওয়াল। তার পরের দিনই ৩ সেপ্টেম্বর বিজেপি কর্মী জয়প্রকাশ যাদব খুনে ব্যারাকপুব আদালতে চার্জশিট দাখিল করে সিবিআই। অভিযোগ, গত ৬ জুন ভাটপাড়ার মুক্তারপুর এলাকায় বিজেপি কর্মী জয়প্রকাশ যাদবকে ডেকে নিয়ে গিয়ে বোমা ছুঁড়ে খুন করে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। বীরভূমের কাঁকড়তলার বিজেপি কর্মী মিঠুন বাগদি থুনে ১০ সেপ্টেম্বর জমা পড়ে তৃতীয় চার্জশিট। গত ১২ জুন বীরভূম জেলার খয়রাশোল ব্লকের কাঁকড়গুলা থানার অন্তর্গত নবসন গ্রামে বিজেপির বুথ সহ-সভাপতি মিঠুন বাগদি খুন হন। ১৪ জুন নদিয়ার কোতোয়ালিতে পলাশ মণ্ডল খুনের ঘটনায় ১১ সেপ্টেম্বর চতুর্থ চার্জশিট পেশ করে সিবিআই। অভিযোগ, গত ১৪ জুন পলাশ মণ্ডলকে বাড়িতে গুলি করে, বোমা মেরে খুন করে দুষ্কৃতীরা।
আর এবার পঞ্চম চার্জশিট পেশ। ভোট পরবর্তী হিংসায় যে প্রত্যেকটি মামলা যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে সিবিআই, সেপ্টেম্বর মাসে একের পর এক চার্জশিট পেশই যেন তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ।