RRampurhat, TMC leader, ছাত্রী খু*নে সাসপেন্ড মহিলা অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টর, নাম জড়ালো তৃণমূল নেতার

আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, বীরভূম, ১৯ সেপ্টেম্বর: ছাত্রী খুনের ঘটনায় কর্তব্যে গাফিলতির দায়ে সাসপেন্ড করা হলো রামপুরহাট থানার এক মহিলা পুলিশ অফিসারকে। জুলি সাহা নামে ওই পুলিশ অফিসার বীরভূমের রামপুরহাট থানায় মহিলা অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টর পদে কর্মরত। প্রথম দিকে তিনি নিখোঁজ ছাত্রীর তদন্তকারী অফিসার ছিলেন বলে সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে। এবার ঘটনার সঙ্গে নাম জড়ালো তৃণমূল নেতার।

এদিকে এদিনই গ্রামে যান কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী, রামপুরহাটের বিধায়ক তথা ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চট্টোপাধ্যায় এবং অভয়া মঞ্চের তিন প্রতিনিধি। নাবালিকা খুনে ফের সিবিআই তদন্তের দাবি জানালো পরিবার। সেই সঙ্গে নিখোঁজ দেহাংশ উদ্ধারের দাবি জানানোর পাশাপাশি ফরেনসিক ময়না তদন্তের দাবি জানিয়েছে। পরিবারের দাবি, শিক্ষককে পুলিশ যখন আটক করেছিল সেই সময় তৃণমূলের রামপুরহাট ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য পান্থ দাস তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে এসেছিল। সে আবার ওই স্কুলের পার্শ্বশিক্ষক। ফলে তাঁর ভূমিকা তদন্ত করে দেখার দাবি জানানো হয়েছে।

এদিন অধীর রঞ্জন চৌধুরী পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “পরিবার চাইলে আমরা হাইকোর্ট কিংবা সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে সিবিআই তদন্তের ব্যবস্থা করবো। তবে স্থানীয় প্রশাসনকে বলব তারা এই ঘটনার সঙ্গে কারা কারা যুক্ত এটা তদন্ত করে বের করুক। আদিবাসী সমাজে আস্থা ফেরাক। একটি ছোট্ট নিষ্পাপ মেয়েকে খুন করা হলো আর পুলিশ এখনও পর্যন্ত তাঁর সম্পূর্ণ দেহ উদ্ধার কোর্টে পারল না! ফলে আদিবাসী সমাজ পুলিশের প্রতি আস্থা হারাচ্ছে। এছাড়া স্কুল কর্তৃপক্ষও দায় এড়িয়ে যেতে পারে না। তারা পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পারত। কিন্তু তারা একটিবারও পরিবারের সঙ্গে দেখা করেননি। এটা দুর্ভাগ্যজনক।”

আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যিনি তদন্তকারী অফিসার ছিলেন জুলি সাহা, তিনি তদন্তে বাড়িতে গিয়ে কিছু পেলেন না। অথচ পরে সেই বাড়ি থেকেই সেক্সের জিনিপত্র উদ্ধার হয়েছে। বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপারকে জানানোর পর তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। পরিবারের দাবি মেনে ফরেনসিক রিপোর্ট করার প্রক্রিয়া চলছে। ডুবুরি নিয়ে এসে দেহের অবশিষ্ট অংশ খোঁজার কাজ করা হবে। তদন্ত প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য কলকাতা থেকে বিশেষ সরকারি আইনজীবী নিয়ে এসে মামলার দেখভাল করা হচ্ছে। আমরাও চাই ওই শিক্ষকের ফাঁসি হোক।” তবে পরিবারের সিবিআই তদন্তের এবং দলের নেতা পান্থ দাসের বিষয়টি এড়িয়ে যান আশিসবাবু।

যদিও মৃত ছাত্রীর জামাইবাবু বলেন, “আমরা অধীরবাবুর কাছে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছি। সেই সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা তুলে ধরা হয়েছে। কারণ প্রথম দিন যখন শিক্ষককে আটক করা হয়েছিল সেই সময় তৃণমূলের পান্থ দাস তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে। ফলে স্কুলের শিক্ষকরাও অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে। সমস্ত দিক তদন্ত করে দেখা হোক”।

তবে মোবাইল বন্ধ থাকায় পান্থ দাসের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।“

অনন্যা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “অভিযুক্ত শিক্ষক অন্যান্য ছাত্রীদের সঙ্গেও অশালীন আচারণ করতেন। প্রধান শিক্ষককে গ্রামবাসীরা জানিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। ফলে তাঁর বিরুদ্ধেও পকসো আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা ভালো সরকারি আইনজীবী পেয়েছি। আমরা পুলিশকে বলেছি দ্রুত চার্জশিট জমা দিয়ে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।”

এদিন বিকেলের দিকে অবরোধ উঠে গিয়েছে। তবে স্কুল ছিল বন্ধ। জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, “যে ঘটনা ঘটেছে সেটা জঘন্যতম। আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। মহকুমা পুলিশ আধিকারিককে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আশা করছি মাসখানেকের মধ্যে তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করে কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করব।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *