আমাদের ভারত,২৩ নভেম্বর:রাতারাতি সব অঙ্ক উল্টে পাল্টে গেল। খেলা ঘুরিয়ে দিয়ে মহারাষ্ট্রের ফের ক্ষমতা দখল করল বিজেপি। মোদীর এক চালেই কি কিস্তি মাত করল বিজেপি? সেই প্রশ্নই এখন ঘুরছে রাজনৈতিক মহলে। মহারাষ্ট্রের মানুষের ঘুম ভাঙার আগে উঠে গেল রাষ্ট্রপতি শাসন। সকাল আটটার মধ্যে রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করলেন দেবেন্দ্র ফড়নবিশ ও উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন এনসিপির অজিত পাওয়ার।
শনিবার ভোর ৫.৪৭। রাষ্ট্রপতি শাসন তুলে নেওয়া হয়েছে মহারাষ্ট্র থেকে নোটিশ জারি করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই পদক্ষেপ বিজেপি ও এনসিপি ছাড়া সম্ভবত কেউ জানত না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের জারি করা নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে ১২ দিন ধরে চলা মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহার করছে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। ২৩শে নভেম্বর থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। আর তারপরই সকাল ৮.১০ নাগাদ দেখা গেল রাজ্যপাল ভগৎ সিং কেশিয়াড়ি ভবনের দেবেন্দ্র ফড়নবিশ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিচ্ছেন। একইসঙ্গে উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন এনসিপি বিধায়ক অজিত পাওয়ার।
দেবেন্দ্র ফড়নবিশ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের কয়েক মিনিটের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী টুইট করেন। টুইটে লেখেন, মহারাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করতে মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ এবং উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার একসাথে কাজ করবেন বলে বিশ্বাস করি।
বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ টুইট করেন,’ আমার বিশ্বাস উন্নয়ন এবং কল্যাণের স্বার্থে মহারাষ্ট্রে সরকার তৈরি হবে। উন্নয়নের মানদন্ড স্থাপিত হবে মহারাষ্ট্রে।
স্থায়ী সরকার গড়তে অজিত পাওয়ারের সমর্থন পাওয়ার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ।
স্বভাবতই বিজেপির এই পদক্ষেপে রীতিমতো ক্ষুব্ধ কংগ্রেস শিবসেনা। যদিও শরদ পাওয়ার এর দাবি আজিত পাওয়ার তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে বিজেপিকে সমর্থন করেছে এতে তার কোনো সমর্থন নেই। অজিত পাওয়া কে সমর্থন করেছে ২২ জন এনসিপি বিধায়ক।তার সঙ্গে রয়েছেন কয়েকজন শিবসেনা বিধায়ক। আর অজিত পাওয়ার বলেছেন মহারাষ্ট্রকে শক্তিশালী সরকার দিতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে অজিত পাওয়ারের এই মন্তব্য থেকে স্পষ্ট যে তার এই পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত শরদ পাওয়ারের সহমতিতেই নেওয়া হয়েছে।
গতকাল রাত পর্যন্ত এই নাটকীয় পটপরিবর্তনের কথা কেউ ভাবতেও পারেনি। খোদ শরদ পাওয়ার বলেছিলেন উদ্ধব ঠাকরে হবেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এক রাতে খেলা ঘুরে গেল। ক্ষমতার রাশ চলে গেল সেই বিজেপির হাতে। দুদিন আগে শরদ মোদীর বৈঠকেই আসলে আজকের নাটকের স্ক্রিপ্ট তৈরি হয়ে গিয়েছিল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। মহারাষ্ট্রের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে শরদ পাওয়ারকে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি করার কথা জানিয়েছেন মোদী। আর তাতেই এই নাটকীয় পরিবর্তন হয়েছে। কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভি বলেছেন শিবসেনার সঙ্গে জোট করে সরকার গঠনের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আলোচনা করতে অনেকটা সময় ব্যয় হয়েছে। আর তারই সুযোগ নিয়েছে বিজেপি।