পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৯ জানুয়ারি: হাতির পালের তান্ডবে বহু সংখ্যক আলু চাষি সর্বশান্ত। গত এক সপ্তাহে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ১২-১৪টি মৌজার ২০০-২৫০ বিঘার বেশি আলু জমি সহ সবজি জমির ফসল নষ্ট করেছে হাতি। ন্যায্য ক্ষতিপূরণের দাবিতে গড়বেতার ধাদিকা মৌজায় ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে তুমুল বিক্ষোভে সামিল হন এলাকার শত শত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবার।
প্রসাশন ও বনদপ্তর এব্যাপারে নির্বিকার থাকায় সেই ক্ষোভ আছড়ে পড়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ থেকে শুরু করে ধাদিকা বিট দপ্তরেও। বিট দপ্তরের সামনেও কৃষকদের তুমুল বিক্ষোভ সহ ঘেরাও চলে। হাতির একাধিক পালের তান্ডব চললেও প্রশাসন কেন কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে নীরব তার জবাব চায় কৃষকরা। ক্ষতিগ্রস্ত জমিগুলি পরিদর্শন সহ তার ছবি তোলা এবং বিঘা প্রতি ন্যূনতম ৩০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করার দাবিতে কৃষকদের এই বিক্ষোভ অবরোধ চলে।
গড়বেতা, গোয়ালতোড়, চন্দ্রকোনা রোড এই তিনটি ব্লক এলাকার একাধিক মৌজায় তিনটি হাতির পাল বিঘারর পর বিঘা আলু ও সবজি জমির সব ফসল খেয়ে সাবাড় করে দিচ্ছে। মাঠজুড়ে আলু চাষিদের কান্নার আর্তনাদ। বোরো চাষের কচি ধানগাছও হাতির পালের পায়ের চাপে তছনছ হয়ে যাচ্ছে।
এলাকার অধিবাসী সুবেদ নায়েক, অজয় মাহাত, সেক রবিউল, সেখ সরফরাজ প্রমুখ কৃষকরা বলেন, বনদপ্তর ও প্রসাশনকে হাতি তাড়ানোর আবেদন জানালেও কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে তারা নীরব। গত ২১ জানুয়ারি রাতে শিলাবতী নদী পার হয়ে গড়বেতার গনগনি হয়ে হাতির পাল ঢোকে। এখন প্রতি দলে ২৫-৩০টি করে হাতি আছে। এমন তিনটি দলমার বুনো হাতির দল এলাকার কৃষকদের ফসল খেয়ে সাবাড় করে চাষিদের সর্বশান্ত করেছে। কেউ মহাজনের থেকে ঋণ নিয়ে, কেউ দাদন দিয়ে চুক্তি চাষ করেছে। এখন সেই ঋণ তারা মেটাবে
কিকরে? এক এক জনের জমি থেকে এক বস্তাও আলু ঘরে উঠবে না।
৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের গড়বেতার ধাদিকাতে সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত পথ অবরোধ ও বিক্ষোভ চলে। শেষে জেলা প্রসাশন ও বনবিভাগ যৌথভাবে কৃষকদের সাথে সভা করে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে আলোচনা করার লিখিত প্রস্তাব দিতে বাধ্য হয়। এরপর জাতীয় সড়ক অবরোধ মুক্ত হয়।