আমাদের ভারত, বালুরঘাট, ২৩ ডিসেম্বর: সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনাতে বঞ্চিত সাধারণ কৃষকরা। স্বজনপোষণের অভিযোগ বিজেপির প্রধানের বিরুদ্ধে। প্রচার না করেই চুপিসারে ক্যাম্প কামারপাড়ায়। দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ কৃষকদের। ধান বিক্রি নিয়ে সরকারি ক্যাম্পের কথা জানেনই না ওই পঞ্চায়েতের বিজেপির উপপ্রধানও। সোমবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটের অমৃতখন্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের কামারপাড়া এলাকায় এই ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। সরকারি ক্যাম্পে ধান বিক্রি করতে না পেরে দীর্ঘক্ষণ কাজ আটকে রাখেন উত্তেজিত কৃষকরা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এলাকায় পৌঁছায় মিল মালিক সহ প্রশাসনের আধিকারিকরা। সকলের সাথে কথা বলে স্বাভাবিক করেন পরিস্থিতি।
প্রধান মেরিলা মুর্মু অবশ্য জানিয়েছেন, একসাথে সকলকে স্লিপ ইস্যু করলে ঝামেলার সৃষ্টি হতে পারে। যে কারণেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সোমবার থেকে সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরু হয় অমৃতখন্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের কামারপাড়া এলাকায়। তবে এই ক্যাম্পের কথা গোপন রেখেই বিজেপি ঘনিষ্ঠ ৪০ জন কৃষককে ধান বিক্রির স্লিপ ইস্যু করা হয় বলে অভিযোগ। এদিন ক্যাম্প খুলতেই এলাকার অন্যান্য কৃষকরা ধান নিয়ে এলাকায় হাজির হতেই তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। কিন্তু স্লিপ না থাকায় দীর্ঘ সময় পরেও তাঁরা ধান বিক্রি করতে না পেরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। বেছে বেছে কিছু কৃষককে ধান বিক্রির স্লিপ ইস্যু করায় স্বজন পোষণ ও দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন স্থানীয় কৃষকরা। খোলা বাজারে ধানের মূল্য কুইন্ট্যাল প্রতি ১২০০ টাকা দর হলেও সরকারি ক্যাম্পে সেই ধানের দাম ১৮৩৫ টাকা রয়েছে। বাজার থেকে সরকারি ক্যাম্পে ধানের দাম বাড়তি থাকায় ক্যাম্পমুখী হয়েছে অধিকাংশ কৃষক। সেখানেও স্থানীয় প্রধানের স্বজন পোষণে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে এলাকার কৃষকরা।
এলাকার দুই কৃষক সুশান্ত মন্ডল ও উত্তম লাহারা জানিয়েছেন, সকাল থেকে বসে থাকার পরেও তাঁরা ক্যাম্পে ধান বিক্রি করতে পারেননি। বেছে বেছে কিছু বিজেপির লোককে স্লিপ দেওয়া হয়েছে। প্রধান সরকারি কাজে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণ করছেন। এই বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
উপপ্রধান অনুপ সরকার জানিয়েছেন, এদিন যে সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনা হবে সে ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেনই না। এ ব্যাপারে কোনও প্রচার করা হয়নি।
পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা দেবদূত বর্মন জানিয়েছেন, সাধারণ কৃষকদের অন্ধকারে রেখে এমন কাজ কখনোই কাম্য নয়।