আমাদের ভারত, কলকাতা, ২৫ অক্টোবর: প্রতি বছরই কালীপুজো ও দীপাবলির পরের দিন মাত্রাতিরিক্ত দূষণের জেরে নাভিশ্বাস উঠত শহর কলকাতার বাসিন্দাদের। কিন্তু এবছর কতটা বদলালো পরিস্থিতি? বায়ু দূষণ সম্পর্কে কী ধীরে ধীরে সচেতন হচ্ছেন আম জনতা?
মঙ্গলবার সকালে শহর কলকার বিভিন্ন স্থানের বাতাসের গুনগত মানের সূচক (এয়ার কোয়ালিটি ইন্ডেক্স) অন্তত সেই কথাই জানান দিচ্ছে। দীর্ঘদিন পরে এমন দূষণমুক্ত আবহাওয়া পেয়ে খুশি পরিবেশবিদরা।
বিগত কয়েক বছরে কালীপুজোয় রাত ১০ টা বাজলেই দূষণের মাত্রা এতটাই বেড়ে যেত, যে চিন্তায় থাকতেন বয়স্ক ও শিশুদের অভিভাবকরা ৷ এবারে অন্তত সেই অবস্থা থেকে মুক্তি মিলেছে বলে দাবি তাদের।
পরিবেশ প্রযুক্তিবিদ সোমেন্দ্র মোহন ঘোষ জানিয়েছেন, ‘‘বিগত ৩০ বছরের ইতিহাসে এমন আবহাওয়া আমরা দেখিনি ৷ শব্দ দূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত না থাকলেও, বায়ু দূষণের মাত্রা একেবারেই ছিল নিয়ন্ত্রিত। কালীপুজোর রাত ও তার পরের দিন সকালে বায়ু দূষণের মাত্রা কতটা কম থাকা সত্যিই ভালো ইঙ্গিত। প্রশাসন, পরিবেশবিদদের লাগাতার সচেতনতামূলক প্রচার ও ঘূর্ণিঝড় সিতরাংয়ের প্রভাবেই এই ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসন যদি বায়ু দূষণ রোধে এই প্রয়াস লাগাতার ধরে রাখতে পারে, তাহলে শীতকালে কলকাতাবাসী নির্মল বাতাস উপভোগ করতে পারবেন। এতে আমাদের পরিবেশ সুরক্ষিত থাকল।’’
মঙ্গলবার সকালে অর্থাৎ কালীপুজোর পরের দিন শহর কলকাতার বিভিন্ন স্থানের এয়ার কোয়ালিটি ইন্ডেক্স ‘সবুজ’। মোটের ওপর কালীপুজোর পরের দিন শহর কলকাতায় বায়ু দূষণের মাত্রা যথেষ্ট কম বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর এই পরিসংখ্যান দেখে বলা যায় বায়ু দূষণের কু-প্রভাব সম্পর্কে সামান্য হলেও সচেতন হচ্ছেন আমাদের সহ-নাগরিকরা।
গত বছর কালীপুজোর পরদিন ফোর্ট উইলিয়ামে দূষণ ছিল প্রতি ঘনমিটারে ১৯৪ মিলিগ্রাম, এবার, অর্থাৎ মঙ্গলবার বেলা ১০টায় তা ছিল ৪৯। বিধাননগরে এই দু’বছরের নির্দিষ্ট দিনে হিসেবদুটি হয়েছে যথাক্রমে প্রতি ঘনমিটারে ২২৯ ও ৩৯ মিলিগ্রাম। বালিগঞ্জে ছিল যথাক্রমে ১৯০ ও ৫৩। হাওড়ার ঘুসুরিতে এবার ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৫৫, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে ছিল ৩২, রবীন্দ্র সরোবর এলাকায় ছিল ৪৯। গত বছরের চেয়ে অনেক কম।
এই সঙ্গে সোমেন্দ্রমোহনবাবু বলেন, বাজি ফেটেছে দেদার, রাত বারোটায় মায়ের মন্ত্র লাউড স্পিকারে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শব্দ বেড়েছে। কোর্টের আদেশের তোয়াক্কা না করে। শব্দবাজির ব্যাপারে মানুষকে আরও সচেতন ও সতর্ক হতে হবে। বারবার আবেদন করা সত্বেও অনেকে আদালতের নিষেধাজ্ঞা মানছেন না। পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে।