আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, সিউড়ি, ৭ অক্টোবর: কয়লাখনিতে বিস্ফোরণে মৃত্যু হলো ৮ জনের। ঘটনার পর এলাকার মানুষ ক্ষতিপূরণের দাবিতে মৃতদেহ আটকে রেখে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। যদিও জেলা পুলিশ সুপারের দাবি, মৃতের সংখ্যা ৬ জন। তিনজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিউড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, বীরভূমের শেষ প্রান্ত লোকপুর থানার ভাদুলিয়া জঙ্গলে একটি খোলামুখ কয়লাখনি রয়েছে। গঙ্গারামচক মাইনিং প্রাইভেট লিমিটেড নামে ওই কয়লাখনি পিডিসিএল দেখভাল করে। পুজোর আগে কয়লার অত্যাধিক চাহিদা মেটাতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বেশি করে কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছিল বলে এলাকার মানুষের দাবি। সেই মতো এদিনও খনিতে বিস্ফোরণ করার জন্য গাড়িতে বোঝাই করে বিস্ফোরক নিয়ে আসা হয়েছিল খনি এলাকায়। গাড়ি থেকে সেই বিস্ফোরক নামাতে গিয়ে বিপত্তি ঘটে। বিস্ফোরণে শ্রমিকদের শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় পাঁচ শ্রমিকের। মৃতরা হল সোমলাল হেমরম (২৮), জয়দেব মুর্মু (৩২), রবিলাল মারান্ডি (২৮), মঙ্গল মারান্ডি (২৯) এবং যুদ্ধ মারান্ডি (৩২), ভজহরি ঘোষ (৩৫), আসরাফিন যাদব (৪২), অমৃত সিং (৪০)। প্রথম পাঁচজনের বাড়ি একই থানার বাস্তবপুর গ্রামে। ভজহরি গাড়ির চালক। তার বাড়ি পলপাই গ্রামে। অমৃত ও আসরাফিন পশ্চিম বর্ধমানের কাজোরা গ্রামের বাসিন্দা। তারা খনির কর্মী বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার পর স্বজনহারা পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পরেন। তারা ক্ষতিপূরণের দাবিতে পুলিশের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের দাবি, ৩০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ, একটি করে বাড়ি এবং সরকারি চাকরির দাবি জানাতে থাকেন। প্রশাসন সেই দাবি মেনে নেওয়ার পর মৃতদেহ তুলে নিয়ে যাওয়া হয় ময়নাতদন্তের জন্য।
শুকুর মণি বলেন, “আমার সব শেষ হয় গেল। সকালে বাড়ি থেকে কাজে বেরিয়েছিল। আর বাড়ি ফিরল না”।
এলাকার বিধায়ক অনুপ সাহা বলেন, “কয়লাখনির দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার অসাবধানতার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। একটি গাড়িতে অতিরিক্ত বিস্ফোরণ বোঝাই করার ফলেই এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাছাড়া অপ্রশিক্ষিত শ্রমিক দিয়ে বিস্ফোরক নামানোর ফলে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে। আমরা চাই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে হবে। সেই সঙ্গে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।”