আমাদের ভারত, কলকাতা, ৪ আগস্ট: ভারতের প্রায় ৪৫ হাজার শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের সংগঠন ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্স (আইএপি) ও কলকাতা মেট্রোপলিস অ্যাকাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্সের যৌথ উদ্যোগে রবিবার ‘আস্থমাকোন ২০২৪’ অনুষ্ঠিত হলো কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। শিশুদের হাঁপানি প্রতিরোধের পাশাপাশি এই অসুখের অত্যাধুনিক চিকিৎসা নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অভিজ্ঞতার আদান প্রদান এই সম্মেলনের লক্ষ্য।
এদিনের অন্যতম উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল, এই প্রথম ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির সঙ্গে আইএপি-র একটি মউ (সমঝোতাপত্র) স্বাক্ষর হল। এই চুক্তির ফলে ভারতীয় শিশু বিশেষজ্ঞরা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন এনএইচএস হাসপাতালগুলিতে ৩ বছরের জন্য প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। ফলে আমাদের দেশের শিশুদের আরও উন্নত মানের অত্যাধুনিক চিকিৎসা দেওয়ার একটা নতুন রাস্তা খুলে গেলো।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও এনএইচএসএর পক্ষ থেকে ডা: অমিত গুপ্তা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। আইএপি-র পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন এই সংগঠনের সভাপতি ডা: জি ভি বাসব রাজা, সেক্রেটারি জেনারেল ডা: যোগেশ পারিখ এবং কোষাধ্যক্ষ ডা: অতনু ভদ্র। এছাড়া প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ পেডিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গেও আইএপি-র একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। তাতে এই দুই প্রতিবেশী দেশের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা দু’দেশের হাসপাতালে গিয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতার আদান প্রদান করে শিশুদের চিকিৎসাকে আরও উন্নত করতে পারেন।
বাংলাদেশ পেডিয়াট্রিক অ্যাসোশিয়েশনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডা: সারাবন তাহুরা, জাহাঙ্গীর আলম এবং ডা: রহুল আমিন। এর সঙ্গে শিশুদের হাঁপানির নতুন নতুন চিকিৎসা এবং রোগের বাড়াবাড়ি প্রতিরোধে বিভিন্ন টিকার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও আলোচনা হয়। হাঁপানির চিকিৎসায় ‘ইনহেলার থেরাপি’ যে সবচেয়ে উপযোগী তা সকলেরই জানা। ইদানীং হাঁপানির চিকিৎসায় ‘এসএমএআরটি’
(সিঙ্গল মেন্টেনেন্স অ্যান্ড রিলিভার থেরাপি)
ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। বাড়াবাড়ি ধরণের হাঁপানিতে এটি অত্যন্ত উপযোগী।
একই সঙ্গে কষ্টের উপশম হবার সঙ্গে সঙ্গে রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় এই চিকিৎসার সাহায্যে। যে কোনও অসুখে একাধিক ওষুধ ব্যবহার করার অসুবিধের কথা ভেবেই এই চিকিৎসা। সারা বছরে বাচ্চাদের হাঁপানির নানা দিক নিয়ে আলোচনার অন্যতম মঞ্চ আইএপি-র বার্ষিক সম্মেলন।
ডা: অতনু ভদ্র জানালেন যে, এই সংগঠন থেকে বিভিন্ন স্কুলে হাঁপানি সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলা হচ্ছে। স্কুলগুলিকে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে অনুরোধ জানানো হয়েছে যে প্রতিটি স্কুলে ফার্স্ট এইড বক্সের মত ইনহেলার রাখা উচিৎ। এর ফলে হাঁপানির আক্রমণ অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তিতে আইএপি-র ইন্টারন্যাশনাল লিয়াজো কমিটির আহ্বায়ক ডা: রঞ্জন পেজাভের, ডা: বসন্ত খালাতকর এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা: অমিত গুপ্তাকে ধন্যবাদ জানানো হয় শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে। আশা করা যায়, এই সম্মেলন আগামী দিনে শিশুদের হাঁপানি-সহ অন্যান্য চিকিৎসায় অনেক নতুন দিক দেখাতে পারবে।