তৃণমূল বিধায়কের নেতৃত্বে ধিক্কার মিছিল থেকে ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল শান্তিনিকেতনের মেলার মাঠের সবকিছু

আশিস মণ্ডল, শান্তিনিকেতন, ১৭ আগস্ট: প্রাচীর দিয়ে বিশ্বভারতী মেলার মাঠ ঘিরে ফেলার প্রতিবাদে মিছিল থেকে উত্তেজনা ছড়াল শান্তিনিকেতনে। সকালে প্রায় হাজার দশেক লোকজন নিয়ে বোলপুর দমকল কেন্দ্রের সামনে থেকে মিছিল করা হয়। মিছিলে ছাত্রছাত্রী, প্রাক্তনীরা থাকলেও সামনের সারিতে ছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ছিল বহিরাগত লোকজনও। মিছিল মেলার মাঠে পৌঁছতেই সব কিছু ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় নিমেষের মধ্যে।
বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পৌষ মেলার মাঠ ঘিরে ফেলার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বেশ কয়েক দিন ধরে এলাকায় উত্তেজনার পারদ ছিল। রবিবার এনিয়ে একপ্রস্থ অশান্তি হয়। প্রাক্তনীদের হেনস্থার অভিযোগ ওঠে বিশ্বভারতীর নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের সরগরম ছিল শান্তিনিকেতন চত্বর। প্রতিবাদে সোমবার সকালে ধিক্কার মিছিলের ডাক দেওয়া হয়।

মিছিলে কোনও পতাকা না থাকলেও সামনের সারিতে ছিলেন দুবরাজপুর বিধানসভার বিধায়ক নরেশ বাউরি, বোলপুর পুরসভার কাউন্সিলর শেখ ওমর সহ অনেকে। সকালেই বিভিন্ন জায়গা থেকে লোক এসে জমায়েত হন বোলপুর দমকল কেন্দ্রের সামনে। এরপরেই তারা মিছিল করে মেলা মাঠের দিনে এগিয়ে যায়। কাজের জায়গায় মিছিল পৌঁছতেই সকলে ছত্রভঙ্গ হয়ে প্রাচীর তৈরির জন্য নির্মিত তদারকি ক্যাম্প ভেঙ্গে ফেলা হয়। ক্যাম্পের মধ্যে থাকা চেয়ার টেবিল ফ্যান সব ভেঙ্গে তছনছ করা হয়। প্রাচীর তৈরি জন মজুত সিমেন্ট সম্পূর্ণ নষ্ট করে দেওয়া হয়। ঠিকাদার সংস্থার মেশিন ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর মেলা মাঠে ঢোকার সমস্ত গেট ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। মেলা মাঠের অধিকাংশ স্থায়ী বাতিস্তম্ভও ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে।

তবে ঘটনার সময় পুলিশের দেখা মেলেনি। নরেশ বাউরি বলেন, “আমি তৃণমূলের বিধায়ক হলেও বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ছাত্র। ১৯৮০ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত আমি এখানে অধ্যাপনা করেছি। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ চেয়েছিলেন প্রকৃতির কোলে পড়াশোনা, বিনোদন। কিন্তু একজন করে উপাচার্য আসছেন আর নিজেদের মতো করে বিশ্বভারতীকে সাজাতে গিয়ে রবীন্দ্র আদর্শকে বিসর্জন দিচ্ছেন। তাই আমরা ধিক্কার মিছিল বের করেছিলাম”। তাবে কারা ভাঙ্গচুর চালাল তা নিয়ে কিছু বলতে চাননি তিনি। এদিকে ঘটনার পরেই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জরুরী বৈঠকে বসেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *