শান্তিপুর শহরের মধ্যে হলেও এই রাস্তা হার মানায় গ্রাম কে–ও, আশ্বাসের পর আশ্বাস দিয়ে কেটে গেছে ১৭ বছর

স্নেহাশীষ মুখার্জী, আমাদের ভারত, নদিয়া, ৯ জুলাই: সাদা জামাকাপড়ে, বেশিরভাগ দিনেই কাদা লাগিয়ে স্কুলে পৌঁছয় ছাত্র ছাত্রীরা। হাসপাতালে যাওয়ার শর্টকাট রাস্তা হলেও, ঘুর পথেই যেতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন এলাকাবাসী। ২০০৫ সালে তৈরি হওয়ার পর, ১৭ বছর ধরে কোনও রক্ষণাবেক্ষণ নেই চার পাঁচটি পাড়ারা মানুষের যাতায়াতের এই পথ। গ্রামের রাস্তা কেও হার মানায় শহরের এই রাস্তা। নদিয়ার শান্তিপুর শহরের তিন নম্বর ওয়ার্ডের গোপালপুর গোলাম রহমান লেনের বাসিন্দারা এমনই নানান অভিযোগ তুললেন বেহাল রাস্তা সম্পর্কে।

এলাকাবাসীর বক্তব্য দীর্ঘদিন ধরে, কাউন্সিলরকে বলেও মেলেনি ফল, হচ্ছে হবে করেই কেটে গেছে, ১৭ টা বছর। স্থানীয় বাসিন্দা চম্পা বিবি জানান, আমরা যেন গরু ছাগল। সেই জন্য এই ধরনের রাস্তা করে দিয়েছে। আমরা যে ধরনের রাস্তা ব্যবহার করি তা পাড়া গ্রামের লোকেরাও ব্যবহার করে না। মনেই হচ্ছে না এটা পৌরসভার রাস্তা। পুরোটাই ভাঙ্গাচোরা রাস্তা। কাউন্সিলরকে বারবার বলা সত্ত্বেও রাস্তা ঠিক করে না। কোনও কথাই কাউন্সিলরের কানে যায় না।

স্কুল ছাত্রীর সেরিনা খাতুন জানায়, আমরা ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি এই রাস্তার দশা একই রকম ভাঙ্গাচোরা। রাস্তায় বড় বড় গর্ত হয়ে গেছে। এই রাস্তা দিয়ে গ্রামের ৫০ জনের বেশি ছাত্রছাত্রী যাতায়াত করে। প্রত্যেকদিনই তাদের দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। সাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে প্রত্যেকদিনই কারুর না কারো হাত পা কেটে যায়, গা হাত পা ছড়ে যায়। সাদা জামায় কাদা লেগে যায়। বৃষ্টি হলে তো এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতই করা যায় না।

স্থানীয় বাসিন্দা জাহির শেখ জানান, ২০০৫ সালের পর থেকে এখানে আর রাস্তা হয়নি। কাউন্সিলরকে বললে তিনি হচ্ছে হবে বলে টালবাহানা করছেন। এই রাস্তা দিয়ে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়া যায়। ডেলিভারি মহিলাদের ঘুর পথে নিয়ে যেতে হয়। স্কুলের বাচ্চারা প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। কিন্তু কাউন্সিলর শুধু হচ্ছে হবে বলে আমাদের আশ্বাস দিয়ে চলেছেন।

শান্তিপুর পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রশান্ত বিশ্বাস জানান, আমাদের প্রাক্তন তৃণমূলের চেয়ারম্যান অজয় দের সময়ে এই রাস্তাটা সংস্কারের জন্য পৌরসভা থেকে টাকা অনুমোদন হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে রাস্তাটার কাজ আটকে গেছিল। বর্তমানে যিনি প্রশাসক ছিলেন তাকেও জানানো হয়েছিল বিষয়টা। তখন তিনিও সচেষ্ট হয়েছিলেন কাজটা করবার জন্য। কিন্তু সে সময়েই পৌর ভোট ঘোষণা হয়। তারপর যখন নতুন বোর্ড হয় আমরা আমাদের চেয়ারম্যানকে জানিয়েছিলাম। ভাইস চেয়ারম্যানকেও চিঠি করেছিলাম। যেহেতু সামনে ঈদ আছে সেহেতু রাস্তায় কিছুটা ঘেঁস ফেলে রাস্তা মেরামতের কাজ করা হয়েছে, যাতে দুর্ঘটনা কিছুটা হলেও কমে। আমাদের চেয়ারম্যান নিজে এসে রাস্তাটা দেখে গেছেন। আশা করছি ঈদ চলে গেলে খুব শিগগিরই তিনি নতুন রাস্তার ব্যবস্থা করে দেবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *