পারিবারিক মণ্ডপেও দেবীপূজার অশাস্ত্রীয় ক্রিয়াকলাপের প্রতিবাদ আছড়ে পড়ল বিরাটিতে

আমাদের ভারত, ৪ অক্টোবর:
সঙ্ঘ ঘরানায় ইদানীং পারিবারিক পুজোস্থল এবং পারিবারিক অনুষ্ঠানকে সার্থক সামাজিক রূপ দিচ্ছেন স্বয়ংসেবকরা৷ আমন্ত্রিত মানুষজন, প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন একত্রিত হয়ে কিছুটা সময় বরাদ্দ রাখছেন সংশ্লিষ্ট বৌদ্ধিক আলোচনায়। কৃতবিদ্য গবেষক, অধ্যাপক, বিদ্যাবিদকে সেখানে বক্তব্য রাখতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন তারা। সমবেত মানুষজন ধৈর্য ও নিষ্ঠা ভরে তা শুনছেন এবং এই কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করছেন।

নিমতা-বিরাটি নিবাসী রবীন্দ্র দত্তের গৃহে দীর্ঘদিন ধরেই দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। পূজাপোলক্ষে তাঁর সেমিনার রুমে তিনি ভারতমাতার প্রতিকৃতি ব্যাকগ্রাউণ্ডে রেখে এবার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন বিশিষ্ট কৃষি বিশেষজ্ঞ ও অধ্যাপক তথা হিন্দু ধর্মের মাহাত্ম্য কীর্তনীয়া ড. কল্যাণ চক্রবর্তীকে। অধ্যাপক চক্রবর্তী এবছর নানান মঞ্চেই থিমপূজার অশাস্ত্রীয় রীতিনীতির বিরুদ্ধে, হিন্দু ধর্মের প্রতি নেমে আসা আঘাতের বিপ্রতীপে, বাংলাভাষায় পূজার মন্ত্রপাঠ ইত্যাদির বিরোধিতা করে শাস্ত্র সম্মত পুজানুষ্ঠান আয়োজন করার আহ্বান জানিয়েছেন।

তারই অঙ্গ হিসাবে বীরাষ্টমী বা দুর্গা অষ্টমীর দিন রবিনবাবুর বাড়িতে আয়োজিত স্থানীয় স্বয়ংসেবক ও উপস্থিত নাগরিকবৃন্দের সামনে দেবী মাহাত্ম্য, ভারতমাতার সঙ্গে দেবী দুর্গার সম্পর্ক, হিন্দু ধর্মের উপর নেমে আসা বিধর্মীদের কীর্তিকলাপ এবং থিমের পুজোর নামে অশাস্ত্রীয় আচরণের বিরোধিতা করে বক্তব্য রাখার আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন।

উপনিষদের সংগঠন মন্ত্র পাঠ করে এবং শাক্তগীতি পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় বৌদ্ধিক সভা। অধ্যাপক চক্রবর্তী বলেন, দেবীর আবির্ভাব সকল দেবতার সম্মিলিত শক্তিতে, তেজরাশিতে। যেমন বিষ্ণুর তেজে দেবীর বাহুসমূহ তৈরি হল। নানান দেবতা দিলেন নিজেদের আয়ূধ। মহাদেব দিলেন ত্রিশূল, বিষ্ণু দিলেন সুদর্শন চক্র এবং কৌমুদকী গদা, বরুণ দিলেন পাশ, পবন তীক্ষ্ণবাণ, যম কালদণ্ড, মহাকাল খড়গ এবং ঢাল ইত্যাদি। অর্থাৎ দেবীর মধ্যে রূপক সংকেতে হিন্দু ধর্মের নানান কৌমগোষ্ঠীর সমন্বয় এবং মিলনের আভাস রয়েছে। হিন্দুদের বাঁচবার এটাই পথ। দুর্গাপূজা থেকে সেই নির্যাসটিই গ্রহণ করতে হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *