আমাদের ভারত, ২৪ সেপ্টেম্বর: শারদোৎসবে প্রাকৃতিক দুর্যোগে মহানগরীর বিভিন্ন অঞ্চলে বড় গাছ পড়ে গিয়েছে। যে সব জায়গায় রাস্তা আটকে গিয়েছিল, সে সব সরানো হয়েছে। তবু নানা জায়গায় পড়ে আছে বহু গাছ। এই অবস্থায় পুর-কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন পরিবেশবিদ সৌমেন্দ্র মোহন ঘোষ।
বুধবার সৌমেন্দ্রবাবু এই প্রতিবেদককে বলেন, “পুরো একদিন রাস্তায় জল জমে থাকার কারণেই বহু হেলে পড়া গাছের গোড়া আলগা হয়ে গেছে, ফলে যে কোনও সময়ে বড় দুর্ঘটনা হতে পারে। কলকাতা পৌর সংস্থার উচিত অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া। এই বিষয়ে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে বিষয়টি জানিয়েছি। দেখা যাক কী হয়! কারণ আবার আসবে ঝড় বৃষ্টি।”
একই সঙ্গে সৌমেন্দ্রবাবু বলেন, “কলকাতায় পুজোর তোরন ও হোর্ডিং নির্মাণের জন্যও সবুজ ধ্বংস হয়েছে। কলকাতায় ব্যক্তিপিছু বৃক্ষরোপণের হার খুবই কম, শহরের ১% এরও কম এলাকা বনভূমিতে পরিণত হয়েছে। গত দশকে শহরটিতে বনভূমির ৩০% হ্রাস পেয়েছে, যা ২০১১ সালে ২.৫ বর্গকিলোমিটার থেকে ২০২১ সালে ১.৮ বর্গকিলোমিটারে নেমে এসেছে। এটি অন্যান্য প্রধান ভারতীয় শহরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম।
আরও বিস্তারিত বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে: কলকাতার ১% এরও কম এলাকা বনভূমি হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে। ২০১১ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে শহরটি তার বনভূমির প্রায় ৩০% হারিয়েছে। অন্যান্য শহরের সাথে তুলনা: মুম্বাই, হায়দরাবাদ এবং দিল্লির মতো অন্যান্য শহরে সবুজ আচ্ছাদনের শতাংশ অনেক বেশি (১৩% থেকে ২৫% পর্যন্ত), কলকাতার এলাকা উল্লেখযোগ্যভাবে কম।
বিশেষজ্ঞরা সবুজ আচ্ছাদনের ক্ষতির জন্য ‘উন্নয়ন’ কার্যক্রমকে দায়ী করেছেন, যেখানে বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য গাছ কাটা হচ্ছে। কলকাতার অবশিষ্ট সবুজ জায়গাগুলো সংরক্ষণের জন্য উদ্বেগ ক্রমবর্ধমান। এ ব্যাপারে পরিবেশ নিরীক্ষা এবং বৃক্ষশুমারির প্রয়োজনীয়তা-সহ পদক্ষেপ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
অনেক পরিবেশবাদী সংগঠন এবং পরিবেশবাদীরা দুর্গাপূজার সময় রাস্তার ধারে হোর্ডিং এবং প্যান্ডেলের গেট স্থাপনের মতো বিষয়গুলি উত্থাপন করেছিলেন, বৃক্ষশুমারি এবং পরিবেশ নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপেক্ষা করে বিশাল গাছগুলিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। কলকাতা পৌরসংস্থা এবং বন বিভাগের আনুষ্ঠানিক অনুমতিপত্র ছাড়াই দুর্বৃত্তরা বৃহৎ আকারের সুস্থ গাছগুলিকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। কেএমএ এবং এর আশেপাশের বিভিন্ন এলাকার নাগরিকদের অনেকে এ ব্যাপারে চিন্তিত।”

