জাতীয়স্তরে সামাজিক কাজের স্বীকৃতি পেলেন শিক্ষারত্ন দুর্গাপদ মাসান্ত

জে মাহাতো, মেদিনীপুর, ১০ নভেম্বর: সম্মানিত হলেন দুর্গাপদ মাসান্ত। এর আগে ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা বিভাগ থেকে পেয়েছেন “শিক্ষারত্ন” সম্মান। এছাড়া দুটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা থেকে পেয়েছেন “সমাজবন্ধু সম্মাননা” এবং “আচার্যরত্ন সম্মাননা-১৭”। আর এবছর “গ্লোবাল স্কুল অ‍্যাওয়ার্ডস” থেকে পেলেন সামাজিক কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ বিশেষ সম্মাননা।

বতর্মানে মেচেদার বাসিন্দা হরশঙ্কর গড়কিলা শান্তাময়ী হাইস্কুলের শিক্ষক দুর্গাপদবাবু সারা বছর ধরে নানা সামাজিক কাজ করে থাকেন। ছাত্রছাত্রীদের সামাজিকভাবে সচেতন করতে প্রতিদিনই প্রার্থনা মঞ্চে অন‍্যান‍্য বিষয়ের পাশাপাশি ডেঙ্গু, ম‍্যালেরিয়া, যক্ষ্মা, করোনা প্রভৃতি বিষয়ে সচেতনতা মূলক পাঠ করে থাকেন। এছাড়া “সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ”, “মাদক বিরোধী দিবস”, কিংবা “পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ” সচেতনতা বাড়াতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে প্রতিবছরই ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে পথে নামেন। সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে ডেঙ্গু, ম‍্যালেরিয়ার পাশাপাশি নিরক্ষরতা দূরীকরণ, প্লাস্টিক বর্জন, জল সংরক্ষণ, বৃক্ষ রোপণ প্রভৃতি বিষয়ে ছোট ছোট নাটক লিখে তা ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে পরিবেশনও করান। দুর্গাপদবাবু এ পযর্ন্ত প্রায় ৫০ বোতল রক্তদানও করেছেন।

একক উদ‍্যোগ ছাড়াও একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থেকে নির্মল বাংলা এবং স্বচ্ছ ভারত গড়তে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন শহরে পথে নেমেছেন , বন্যা দূর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, মরণোত্তর দেহদানে স্ত্রীসহ দুজনে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছেন, জঙ্গলমহলে প্রান্তিক মানুষদের কাছে নানা ধরনের পরিষেবা পৌঁছে দিয়েছেন, বড়দিনে পিকনিককারীদের হাতে থার্মোকলের পরিবর্তে পরিবেশ বান্ধব শালপাতার থালাবাটি তুলে দিয়েছেন। এছাড়া লাল কাঁকড়া ও সমুদ্র উপকূলের পরিবেশ বাঁচাতে চাঁদিপুর থেকে দিঘা-১০৭ কিমি(কোস্টাল ট্রেকিং) হেঁটেছেন এবং ডায়াবেটিস সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে কলকাতায় “হাঁটো বাংলা হাঁটোতে” অংশও নিয়েছেন।

দুর্গাপদবাবু “ওজন দিবস” এবং “স্বচ্ছ ভারত দিবস”-এ অনলাইন দৌড়ে অংশও নিয়েছেন। তাঁর কথায় “শিক্ষা এখন আর দ্বিমুখী নয়, ত্রিমুখী প্রক্রিয়া। সমাজও একজন শিক্ষককের কাছ থেকে কিছু প্রত‍্যাশা করে। তাই এই বিভিন্ন সামাজিক উদ‍্যোগ।”

শিক্ষক দুর্গাপদবাবুর বতর্মান বয়স প্রায় ষাটের কাছাকাছি। আর কয়েক মাস বাদে অবসর নেবেন। এই বয়সেও তিনি সদা চঞ্চল। করোনা আবহে তিনি ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে অনলাইনে পাঠদান, “স্বাধীনতা দিবস”, “শিক্ষক দিবস”-প্রভৃতি পালন করে চলছেন। সামাজিক কাজের পাশাপাশি নিয়মিত ছোটাদৌড়া, সাংস্কৃতিক চর্চা ও লেখালেখির কাজেও তিনি নিজেকে সারাবছর যুক্ত রাখেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *