সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ৬ অক্টোবর: স্বপ্নাদেশে প্রাপ্ত নিমকাঠের প্রতিমায় দুর্গাপূজা হয় ওন্দার দামোদরবাটির চৌধুরী বাড়িতে। তিনশো বছরের অধিককাল থেকেই এই বাড়িতে আড়ম্বরপূর্ণ দুর্গাপূজা হয়ে আসছে। সেকালের জমিদারির জৌলুস হয়তো আজ অনেকটাই ম্রিয়মাণ, তবুও এলাকায় আজও রয়েছে তার সমাদর।
বাংলার ১১৫৩ সালে দামোদর চৌধুরী এই পূজার সূচনা করেন। পরবর্তী কালে এই বংশের বদন চন্দ্র চৌধুরী স্বপ্নাদেশ পেয়ে নিমকাঠের প্রতিমা তৈরি করান। দেবীমূর্তি বিষ্ণুপুর মল্লরাজ বংশের মৃম্ময়ী মূর্তির আদলে তৈরী।কেবলমাত্র মা দুর্গার মূর্তি নিমকাঠের, বাকি সন্তানদের মূর্তি মাটির। স্বপ্নাদেশ অনুযায়ী প্রতি বারো বৎসর পর মূর্তিতে রঙের প্রলেপ পড়ে। বংশ পরম্পরায় বিষ্ণুপুরের সূত্রধর পরিবার এই কাজ করে আসছে। এই পুজোর আরোও এক বৈশিষ্ট্য এখানে কোনও বলি হয় না, মাকে মাসকলাই উৎসর্গ করা হয়।
পরিবারের সদস্য কালী সাধন চৌধুরী জানান, বিষ্ণুপুরের রাজাদের কাছথেকে প্রাপ্ত জামডোবা মৌজায় প্রায় চারশো একর জঙ্গল, ২০০ বিঘা জমির জমিদারি ছিল। এর সঙ্গে দুটি বড় বাঁধ ছিল। তৎকালীন জমিদার বদন চৌধুরী স্বপ্নাদেশ পান জঙ্গলের রাস্তার ধারে একটি নিমগাছের ডাল ঝুলে আছে। সেই ডাল দিয়ে মূর্তি তৈরীর আদেশ পান স্বপ্নে। তারপর সেই নিমগাছের ডাল কেটে মূর্তি তৈরী করা হয়।
বিষ্ণুপুরের সূত্রধর পরিবার এই মূর্তি তৈরী করে। প্রথমদিকে খড়ের চালায় ঠাকুরপুজো হতো। পরবর্তীতে পাকা ঠাকুর দালান নির্মিত হয়। সেই দালানেই আজও পূজা হয়। এই ঠাকুরদালানের পাশেই নির্মিত হয়েছে দুটি মন্দির। একটি কূলদেবতা রাধা দামোদরের, অপরটি সূর্যদেবতার। দামোদরবাটি গ্রামে গোস্বামী পাড়াতেও দেবী দুর্গার আরাধনা করা হয়। সেখানেও দেবী প্রতিমা নিম কাঠের।

