রাজনৈতিক কারণে পুজো হল দুই ভাগ, উদ্বোধন করলেন শুভেন্দু-ভারতী ও জুন মালিয়া

পার্থ খাঁড়া, মেদিনীপুর, ২৯ সেপ্টেম্বর: মেদিনীপুর শহরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী শরৎপল্লী সর্বজনীন পুজো এবার দুই রাজনৈতিক মতাদর্শে দুই ভাগ হল। ছোট্ট একটি মাঠের দুই প্রান্তে দুই মতাদর্শের দুই পৃথক পূজা মন্ডপ। একটির উদ্বোধন করলেন শুভেন্দু অধিকারী ও ভারতী ঘোষ, অন্যটির উদ্বোধন করলেন জুন মালিয়া ও তৃণমূলের অন্যান্য নেতৃত্বরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর এক ঘন্টার পার্থক্যে দুটি মন্ডপের উদ্বোধন করলেন দুই পক্ষ।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রথমে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের শরৎপল্লী নাগরিক সমিতির মন্ডপ উদ্বোধন করেন শুভেন্দু অধিকারী ও ভারতী ঘোষ। উদ্বোধনী মঞ্চে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “সনাতন ধর্মের জাগরণ ঘটছে। এটা আনন্দের বিষয়। আমরা এবার রাজ্যে দেখেছি দশ হাজারের বেশি গণপতি পূজা হয়েছে, বিশ্বকর্মা পুজো হয়েছে তিন লক্ষ সাতাশ হাজার। একইভাবে দুর্গোৎসব। বহু মানুষ এ সমস্ত অনুষ্ঠান থেকে গীতা বিতরণ করেছেন। মনে রাখবেন ধর্মকে রক্ষা করতেই হবে। তা না হলে আফগানিস্তান থেকে তালিবানরা হাজির হবে উৎখাত করতে। নিজের ধর্মকে রক্ষা করুন সকলে। মায়ের কাছে প্রার্থনা করুন অসুর বিনাশ যেন সবসময় করতে পারি। যেমন করেছি নন্দীগ্রামে।”

এরপর সংবাদমাধ্যমের সামনে নিয়োগ দুর্নীতি ইস্যুতে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “চরম দুর্নীতি হয়েছে নিয়োগের ক্ষেত্রে। যেভাবে লক্ষ লক্ষ ওএমআর সিট ভ্যানিশ করে শূন্য থেকে নম্বর বাড়িয়ে ৫৩ শতাংশ করে দিয়েছে তা জাদু সম্রাট পিসি সরকারও পারতেন না। রাজ্য সরকার চরমভাবে দেউলিয়া। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বিভিন্ন টাকা তুলে অন্যান্য খাতগুলি ম্যানেজ করার চেষ্টা করছে। আমি এই বিষয়ে নির্মলা সীতারামন’কে বিস্তারিত জানাব।”

মঞ্চ থেকে বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষ বলেন, “পাপ আর পুণ্য একসঙ্গে থাকতে পারে না। মুখ্যমন্ত্রী অনেক পাপ করে মঞ্চে চন্ডীপাঠ করলে আশীর্বাদ পাওয়া যায় না ভগবানের। মানুষ অভিশাপ দিচ্ছে। তাই সবাই প্রার্থনা করুন পাপের বিনাশে মা যেন শক্তি দেন আমাদের।”

বিজেপি পরিচালিত মন্ডপের উদ্বোধনের এক ঘন্টা পর মাঠের উল্টোদিকে থাকা শরৎপল্লী নাগরিক সমিতি দুর্গোৎসব কমিটির পুজো মণ্ডপ উদ্বোধন করার জন্য হাজির হন মেদিনীপুরের বিধায়িক জুন মালিয়া। পরিচালনায় স্থানীয় তৃণমূলের কাউন্সিলর ও পৌর প্রধান সৌমেন খান। শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক মন্তব্য নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করেননি জুন মালিয়া। উল্টে শুভেন্দু অধিকারীর উদ্দেশ্যে তার সৌজন্য বার্তা, “উনাকে শুভেচ্ছা জানাই, উনি, ওনার পরিবারের সকলেই ভালো থাকুন।”

তবে উপস্থিত পৌর প্রধান সৌমেন খান বলেন, “আমাদের এই মন্ডপ নিয়ে আইনি বাধা তৈরি করার চেষ্টা করেছিল অন্য পক্ষ।তারা মুর্খের স্বর্গে বাস করছে, অবশেষে আমরা জয়ী হয়েছি, আমরা কিভাবে পুজো করবো কোন মতাদর্শে বিশ্বাসী হব সেসব কখনো আইন ঠিক করে দিতে পারে না। আইনের প্রতি বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা আমাদেরও রয়েছে৷ আমরা পুজো মানুষের জন্য মানুষের স্বার্থে করেছি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *