আমাদের ভারত, ১৩ জুলাই: আজ বিধানসভায় মনোনয়নপত্র জমা দিলেন দা গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের নেতা নগেন্দ্র রায় ওরফে অনন্ত মহারাজ। সেই সময় তার সঙ্গে ছিলেন বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। যিনি বরাবর পৃথক কোচবিহার রাজ্য এবং পরবর্তীকালে পৃথক কেন্দ্রশাসিত কোচবিহারের দাবি জানিয়ে এসেছেন সেই অনন্তকে কেন বিজেপি প্রার্থী করল? এই প্রশ্নের উত্তর রীতিমতো যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করলেন সুকান্ত মজুমদার। তাঁর দাবি, বঞ্চনার কারণেই পৃথক হবার দাবি ওঠে। কিন্তু বঞ্চনাই যদি না থাকে তাহলে দাবিও থাকবে না।
বৃহস্পতিবার অনন্ত মহারাজ রাজ্যসভা নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর তাকেই কেন বিজেপির প্রার্থী হিসেবে বেছে নিলো সংবাদ মাধ্যমের সামনে তার জবাব দেন সুকান্ত। তাঁর কথায়, বাংলার উন্নয়ন বরাবর কলকাতা কেন্দ্রিক থেকে গেছে। তাতে অন্য প্রান্তের মানুষজন নিজেদের বঞ্চিত বলে মনে করেন। বঞ্চনা না হলে দাবিও আর থাকবে না।
সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সুকান্ত বলেন, অনুন্নয়নের জন্য উত্তরবঙ্গে বারবার এমন দাবি উঠেছে। শুধু উত্তরবঙ্গ নয় রাঢ়বঙ্গেও এই ধরনের দাবি শোনা গেছে, এটা অস্বীকারের কোনো জায়গা নেই। কিন্তু এর মূল কারণ হলো অনুন্নয়ন। বাংলার সমস্ত উন্নয়ন কলকাতা কেন্দ্রিক। উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণ না হওয়ায় বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের মনে হয়, তাদের প্রতি দ্বিমাত্রিক আচরণ করা হচ্ছে। অনুন্নয়ন যদি দূর করে দিতে পারি আমরা, তাহলে ওই দাবিও আর থাকবে না।
তবে শুধু অনন্ত নয়, বিজেপি সাংসদ জন বার্লা সহ একাধিক বিজেপি নেতা বাংলা ভাগের দাবি করেছেন, একাধিক বার। তাহলে কি বিজেপির সেই দাবিতে সমর্থন রয়েছে? এই প্রশ্নের জবাবে সুকান্ত বলেন, “আমরা আগেই জানিয়েছি শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বাংলাকে যে রূপে তৈরি করে দিয়ে গিয়েছিলেন, আগামী দিনে সেই রূপেই বাংলাকে দেখতে এবং রাখতে চাই আমরা।”
অন্যদিকে, সুকান্তর মন্তব্যের কোনো প্রতিক্রিয়াই দেননি অনন্ত। তবে গোড়া থেকেই বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে তার নৈকট্য ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। ২০১৯- এর লোকসভা নির্বাচনে এবং ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রচারে থাকতে দেখা গিয়েছিল অনন্তকে। তার বাড়িতে দেখা গিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে প্রতিমন্ত্রীকেও।
এদিকে আবার অনন্ত মহারাজকে পাশে পেতে তৃণমূলের তরফেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। গত বছর ভাইফোঁটায় অনন্তকে শুভেচ্ছা বার্তা ও উপহার পাঠিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনন্তও পাল্টা সৌজন্য দেখিয়েছিলেন। এরপর কোচবিহার পৌরসভার আমন্ত্রণের রাসমেলার উদ্বোধনী মঞ্চে তাকে দেখা গিয়েছিল। তবে তৃণমূলের সঙ্গে বরাবর দূরত্ব বজায় রাখার কথাই তিনি বলে এসেছেন।

