আমাদের ভারত, পূর্ব মেদিনীপুর, ২৯ জুলাই: বঙ্গোপসাগরে উদ্ভূত নিম্নচাপের জেরে সৃষ্টি হয়েছে বৃষ্টি বলয়। আর এই বৃষ্টি বলয়েরের ফলে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি হচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উপকূলবর্তী এলাকা সহ পুরো জেলায়।
গতকাল বিকেল থেকে শুরু হয়েছে এই বৃষ্টি। আর এই অতি বৃষ্টির ফলে উপকূলবর্তী নিচু এলাকাগুলি প্লাবিত হয়েছে। একদিকে অতি বৃষ্টির জল অন্যদিকে সমুদ্র ও নদীতে জলস্ফিতি হয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিতে ঢুকে পড়েছে জল। এর ফলে সমুদ্র উপকূলবর্তী দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর সহ নদী তীরবর্তী খেজুরি, নন্দীগ্রাম এমনকি শিল্পনগরী হলদিয়া জলে ভাসছে।
হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। হলদিয়া টাউনশিপের রাস্তাঘাট জলে পরিপূর্ণ। বেশকিছু আবাসনের নিচের তলায় জল ঢুকে গিয়েছে। ইন্ডিয়ান অয়েল, পেট্রো কেমিক্যাল সহ বেশকিছু শিল্প সংস্থার মধ্যে জমে গিয়েছে জল। ফলে ব্যাহত হয়েছে জনজীবন। হলদিয়া টাউনশিপ এলাকায় বেশকিছু আবাসনের নিচের তলায় জল ঢুকে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন বাসিন্দারা। রাস্তায় জল জমে যাওয়ায় যাতায়াতের অসুবিধা হচ্ছে।
শিল্পনগরীর উল্টোদিকে থাকা নন্দীগ্রাম, খেজুরির নদী তীরবর্তী নিচু এলাকাগুলি প্লাবিত হয়েছে বৃষ্টির জলে। গ্রামীণ এই এলাকাগুলিতে বৃষ্টির জল এবং নদীর জলে প্লাবিত হওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে জনজীবনে। চাষের জমি জলের তলায় চলে যাওয়ায় নষ্ট হয়েছে চাষ। পুকুরগুলো ভেসে যাওয়ায় মাছ চাষের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। যাতায়াত সহ পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে এই এলাকাগুলিতে। আগামী দিনে বৃষ্টির জল আরও বাড়বে বলে আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানাগেছে। ফলে আরও সমস্যা বাড়বে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
জেলাসদর তমলুক পৌরসভার তিনটি ওয়ার্ডের বেশ কিছু অংশ এবং নদী তীরবর্তী এলাকাগুলি প্লাবিত হয়েছে বৃষ্টি ও নদীর জলে। শহরের প্লাবিত এলাকাগুলির রাস্তায় জল জমে যাওয়ায় যাতায়াতের সমস্যা হচ্ছে। দু-একটি ওয়ার্ডে জলের পরিমাণ এতই বেশি যে বাড়ির মধ্যে জল ঢুকে গিয়েছে। ফলে সমস্যায় পড়েছেন পৌর এলাকার বাসিন্দারা।
আজ এবং আগামীকাল এই বৃষ্টি চলতে থাকলে আরও বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হতে পারে। সবমিলিয়ে জেলার চিত্রটি খুবই হতাশা ব্যঞ্জক। আগামীকাল বৃষ্টি না থামা পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পুরো বোঝা যাবে না। শহরাঞ্চলে মানুষ যেমন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তেমনি গ্রামাঞ্চলে মাঠ-ঘাট পুকুর ভেসে যাওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন বহু মানুষ। এই অতিবৃষ্টির ফলে যস বিধ্বস্ত এলাকার মানুষজন আবার দ্বিতীয়বার ক্ষতির সম্মুখীন হলেন।