আমাদের ভারত, ৩১ আগস্ট: শনিবার সন্ধ্যায় দাগী অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করেছে এসএসসি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তালিকা প্রকাশ হতেই রাজনৈতিক তরজা প্রকাশ্যে এসেছে। তালিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তথা বালুরঘাটে সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। এই তালিকা প্রকাশের পর তিনি অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন।
এসএসসির প্রকাশিত অযোগ্যদের তালিকা প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, এসএসসি অযোগ্য শিক্ষকদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। এই প্রথমবারের মতো কোনো রাজ্য সরকার বা রাজ্য সরকারের একটি সংস্থা স্বীকার করেছে যে তারা শিক্ষকদের চাকরি বিক্রি করেছে। তবে তালিকায় থাকা সংখ্যা পূর্ববর্তী আদালতের রায়ের সাথে মিলছে না। খুব কম নাম আছে এই তালিকায়।
অযোগ্যদের তালিকায় অসঙ্গতির বিষয়টি তদন্ত করে দেখার দাবি তুলেছেন সুকান্তবাবু। পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, তালিকা যদি আগে থেকেই ছিল তাহলে কেন যোগ্যদের পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে? তিনি বলেন, তালিকাটি সঠিকভাবে তদন্ত করা উচিত। আগেই যদি এসএসসির কাছে তালিকাটি ছিল তাহলে কেন তারা কলকাতা হাইকোর্ট এবং তারপর সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময় এটা প্রকাশ করেননি? এর জন্য এখন সমস্ত যোগ্য শিক্ষকদের পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে। ইতিমধ্যেই তাদের মধ্যে কয়েকজন প্রাণ হারিয়েছেন। মানসিক চাপের কারণে একজন তপশিলি জাতির শিক্ষক প্রাণ হারিয়েছেন।
গোটা কেলেঙ্কারি দুর্নীতির দায় সরকারের ঘাড়ে চাপিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, যদি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সংস্থা এসএসসি স্বীকার করে নেয় যে, তারা দুর্নীতি করেছে এবং শিক্ষকদের চাকরি বিক্রি করেছে তাহলে কারোর তো এর দায়িত্ব নেওয়া উচিত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসার কোনো নৈতিক অধিকার নেই, অবিলম্বে তাঁর পদত্যাগ করা উচিত।
এসএসসি প্রকাশিত অযোগ্যদের তালিকা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তালিকার মাথায় লিস্ট ওয়ান লিখে উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে অনেকে মনে করছেন, এর অর্থ আরো একটি তালিকা প্রকাশ করা হতে পারে। পাশাপাশি তালিকায় কোন প্রার্থীর কোন বিষয় ছিল, কোন স্কুল ছিল, কত র্যাঙ্ক ছিল ইত্যাদির উল্লেখ নেই। স্বাভাবিকভাবে বিশদ তথ্যগুলি না থাকার কারণে প্রশ্ন উঠেছে তালিকা আদৌ কতটা স্বচ্ছ তা নিয়ে।
স্কুল সার্ভিস কমিশনকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি সতীশ চন্দ্র শর্মার বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, দাগী অযোগ্যদের যেন কোনভাবে পরীক্ষায় বসতে না দেওয়া হয়। পাশাপাশি পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ফের অন্যায় ভাবে অযোগ্যদের নিয়োগের চেষ্টা হলে ফের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হবে। এরপরই অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়ে দেয় কমিশনের আইনজীবী। সেই মতো শনিবার তালিকা প্রকাশ করা হয়।