সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ২৮ মার্চ: করোনা নিয়ে গৃহবন্দি থাকার সময়ে গুজব ছড়ালে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এমনটাই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেটা যে শুধু কথার কথা নয়, এবার তার প্রমাণও মিলল। বেলেঘাটা আইডিতে কর্মরত এক চিকিৎসকের সংক্রামিত হওয়ার খবর জানিয়ে শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন এক মহিলা। স্বাস্থ্য দফতর খবরটি ভুয়ো জানানোর ২৪ ঘন্টার মধ্যেই গ্রেফতার করা হল ওই ভুয়ো ফেসবুক পোস্টকারী তথা ডাক্তার কন্যা চন্দ্রিমা ভৌমিককে।
শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে যেসব স্বাস্থ্যকর্মীরা লড়াই চালাচ্ছেন, বিভিন্ন অব্যবস্থা নিয়ে তারা নিজেরাও আন্দোলন করচ্ছেন। আবার তাদের নিয়েও ইতিউতি নানান গুজব ছড়াচ্ছে ৷ শুক্রবার সোশাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট রীতিমত ভাইরাল হয়ে যায়।
ওই পোস্টে লেখা ছিল, বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের এক চিকিৎসক নাকি করোনা আক্রান্ত। খোদ একজন চিকিৎসক আক্রান্ত হওয়ার খবরে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে শহরবাসীও। আর তারপরই গুজবের হাওয়াকে লাগাম দিতে মাঠে নামতে বাধ্য হয় স্বাস্থ্য দফতর। তারা জানিয়ে দেয়, খবরটি সম্পূর্ণ ভুয়ো। হাসপাতালের কোনও চিকিৎসক কিংবা স্বাস্থ্যকর্মীর কোরোনা সংক্রমণ ঘটেনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও সমস্যায় পড়তে হয়েছে ওই চিকিৎসকের পরিবারকে। এরপরই স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগে অভিযোগ জানানো হয়।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, চন্দ্রিমা ভৌমিক নামে যিনি পোস্ট করেছেন, তিনি নিজেই এক নামী চিকিৎসকের কন্যা এবং পেশায় গায়িকা। বরানগর এলাকার বাসিন্দা চন্দ্রিমা পেশায় গায়িকা। যদিও বিপদ বুঝে চন্দ্রিমা সোশাল মিডিয়ায় ক্ষমা চেয়ে একটি পোস্ট করেছিলেন। চন্দ্রিমা জানান, একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে এই মেসেজ পেয়েছিলেন, সেটিকেই ফেসবুকে পোস্ট করে দেন। পরে তিনি সেই পোস্ট তুলে নেন। কিন্তু তাতে মন গলেনি পুলিশের। শুক্রবার রাতেই তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসা হয় লালবাজারে। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে তিনি এই মেসেজ পেয়েছিলেন, প্রয়োজনে তাদের অ্যাডমিন বা পোস্টকারীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
ছবি: এই সেই ভুয়ো পোস্ট।