আমাদের ভারত, কলকাতা, ৩০ সেপ্টেম্বর: জাতপাত এবং দিল্লির বিরোধীতা প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক তথা সদ্য প্রাক্তন উপাচার্য ডঃ রঞ্জন চক্রবর্তীর মন্তব্যের বিরোধিতা করলেন বিজেপি-র রাজ্য কমিটির সদস্য সুদীপ্ত গুহ
রঞ্জনবাবুর মতে, “অষ্টাদশ শতকের যুগসন্ধিকাল, বাংলার সমাজে তখন রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের অধিষ্ঠান। জাতপাতের মায়ানিগড় রক্ষার দায় নিয়ে জাতিচ্যুতির দণ্ড হাতে সমাজ শাসন করছেন তিনি। তাঁর স্বৈরাচারী সমাজপতিত্বের বিরুদ্ধাচরণ করেছিলেন জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন, তৎকালীন বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ নৈয়ায়িক। ন্যায়ধর্ম ও রাজধর্মের বিরোধে ন্যায়ের পক্ষাবলম্বনের কাজ বাঙালি পণ্ডিতরা অতীতে বহু বার করেছেন; আধুনিক বুদ্ধিজীবীত্বের বহু আগে থেকেই, রাষ্ট্রের ন্যায়গত অসংলগ্নতার বিরুদ্ধে, সমাজরক্ষার দায় হিসাবে। কিন্তু ন্যায়ের ঔজ্জ্বল্যের কাছে রাজসিকতা চিরকাল মাথা নুইয়েছে।”
অন্যদিকে সুদীপ্তবাবু শনিবার এই প্রসঙ্গে জানান, “বাংলায় জাতপাত অনেকদিন আগে থেকেই বিলীন, যবে থেকে পর্তুগিজরা এখানে ব্যবসা করতে আসে এবং গ্রামের গরিবদের সঙ্গে নেয়। সেই আদি সপ্তগ্রাম যুগ থেকে। এখানে বামুন, কায়েত, বৈদ্যদের থেকে মল্লিক, রায়মল্লিক, শীল, নস্কর, বসাক, গায়েনদের অর্থ এবং সমাজে প্রতিপত্তি বেশী ছিল l ইতিহাসের অধ্যাপক ইতিহাসের থেকে গণশক্তি এবং জাগো বাংলা বেশী পড়লে কিভাবে হবে?”
রঞ্জনবাবু এ দিন জানিয়েছেন, “জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সূত্র ধরেই বলা যায়, সর্বভারতীয় আন্দোলনের মধ্যে থেকেও বঙ্গীয় অস্মিতার রাজনৈতিক ও বৌদ্ধিক স্বকীয়তা বজায় রেখেছিলেন সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, চিত্তরঞ্জন দাশ, সুভাষচন্দ্র বসু। বিদেশি প্রশাসনের রক্তচক্ষুর সামনে ধূলিধূসরিত খড়ম তুলে-ধরা বিদ্যাসাগরের প্রজন্মগত দায় তাঁরা অস্বীকার করেননি।”
ভিন্নমত পোষণ করে সুদীপ্তবাবু এই প্রতিবেদককে বলেন “বাংলা কোনও দিন ট্রেড ইউনিয়ন লিডারের মত দিল্লির বিরোধিতা করেনি। নেতৃত্ব দিয়েছেন চিত্তরঞ্জন, সুভাষ বোসরা। স্বাধীনতার পরও দিল্লিতে দাপটে কাজ করেছে অতুল্য ঘোষ, সিদ্ধার্থ রায়, প্রণব মুখার্জি এমনকি প্ৰিয় রঞ্জন দাশমুন্সী। এঁরা নেতা, টেড ইউনিয়ন লিডার না বিচ্ছিন্নতাবাদী নন। পিছনের দরজা দিয়ে চাকরি পেয়ে সরকারি অন্যকুল্য পেতে অঞ্চলিকতার উস্কানি দিলে আগামী দিনে অনেক বেশী দাম দিতে হবে।”