আমাদের ভারত, পূর্ব মেদিনীপুর, ৩ জুন: বুধবার মায়াচরে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সহযোগিতা করেছে মেদিনীপুর কুইজ কেন্দ্র। রূপনারায়ণ নদীর উপর অবস্থিত একটি দ্বীপময় ভূখণ্ড হল মায়াচর। এটির ভৌগোলিক অবস্থান বেশ বৈচিত্র্যপূর্ণ। এখানে প্রায় সাত হাজারেরও বেশি মানুষ বসবাস করেন যার অধিকাংশই পূর্ব মেদিনীপুর এবং হাওড়া জেলা থেকে এসে এখানে বসবাস শুরু করেছেন।
এখানকার অধিকাংশ মানুষের জীবিকা চাষবাস হলেও এখানে বেশ কয়েকটি ইটভাটা থাকায় এখানে অনেক মানুষ এই ইটভাটাগুলোতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু গত ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আমফান এখানে আছড়ে পড়ায় তছনছ হয়ে যায় দ্বীপের প্রায় চারশোটি বাড়ি। এখানে বেশিরভাগ বাড়িগুলির চাল উড়ে যায় এবং অসংখ্য পানের বরজ ভেঙ্গে যায়। যার ফলে পানচাষিদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং সেইসঙ্গে অসংখ্য বিদ্যুতের পোস্ট উপড়ে যায় তার ছিঁড়ে যায়। ফলে কার্যত ১৪ দিন পরেও এই মায়াচর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। এখানে রয়েছে পানীয় জলের হাহাকার আর সেই সঙ্গেই রয়েছে ত্রাণের অপ্রতুলতা। লকডাউনের আগেই নৌকাডুবির কারণে দনিপুর, অমৃতবেড়িয়া থেকে খেয়া পারাপার প্রশাসনিক ভাবে বন্ধ। এখনো পর্যন্ত এখানে পর্যাপ্ত ত্রিপল বা অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী তেমনভাবে এসে পৌঁছয়নি। বুধবার সকালে এই মায়াচরেই পৌছে গিয়েছিল মেদিনীপুর কুইজ কেন্দ্র সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি। সংস্থার ১০ জন স্বেচ্ছাসেবী আজ ৮০টি পরিবারের হাতে ত্রিপল সহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দেয়।
সংস্থার পক্ষ থেকে সংগঠনের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক কৃষ্ণপ্রসাদ ঘড়া জানান, লকডাউনের মধ্যেই আমফানের তান্ডবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়ার ব্রজলালচক এলাকায় এবং কাঁথির সৌলা উপকূলবর্তী অঞ্চলে ১০০টি এবং জঙ্গলমহলে ৪০টির বেশি গৃহহীন পরিবারকে ত্রিপল সহ ভূষিমাল সামগ্রী সাহায্য করেছেন। পাশাপাশি এদিন তারা ত্রিপল সহ চাল, ডাল, চিঁড়ে, সোয়াবিন, মুড়ি, তেল, চা, গুঁড়োদুধ, বিস্কুট, সুজি, চকোস ইত্যাদি ১৪ দফা নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দিলেন ঝড়ের তান্ডবে দুর্দশাগ্রস্ত ৮০টি পরিবারের হাতে। সামাজিক দূরত্ব মেনে এদিনের ত্রাণ সামগ্রী মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সংস্থার সদস্যদের পাশাপাশি, দেশ-বিদেশে থাকা সংগঠনের শুভাকাঙ্ক্ষীদের পাঠানো আর্থিক সহযোগিতায় এই ত্রাণ তুলে দেওয়া সম্ভব হল। তিনি আরোও জানান, তাঁদের সংগঠনের এখন লক্ষ্য এই দুর্দিনে পূর্ব মেদিনীপুরের কমপক্ষে আরও ৫০০টি পরিবারের পাশে দাঁড়ানো। এদিনের কর্মসূচিতে কৃষ্ণপ্রসাদ ঘড়া ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কুইজ কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ড: মৌসম মজুমদার, ভাস্করব্রত পতি, কমলিকা সামন্ত, কালীচরণ দাস, শুভঙ্কর ভুঁইঞা, জয়দেব মন্ডল, চন্দন মন্ডল, গৌতম নন্দ প্রমুখ সদস্য-সদস্যাবৃন্দ এবং সংগঠনের শুভানুধ্যায়ী রঘুনাথ পান্ডা সহ অন্যান্যরা।