ডিএ’র প্রসঙ্গ উঠতেই মেজাজ হারালেন দিদির দূত মালা রায়, আতঙ্কে ভুগছেন বাঁকুড়ার প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক

সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১৯ জানুয়ারি: ডিএ’র প্রসঙ্গ তুলে এখন আতঙ্কে ভুগছেন প্রধান শিক্ষক।প্রশ্ন শুনেই মেজাজ হারালেন দিদির সুরক্ষা কবচ বহনকারী দিদির দূত তৃণমূলের রাজ্য মহিলা নেত্রী মালা রায়।

আজ মালা রায় গঙ্গাজলঘাঁটি সাংগঠনিক ব্লক ২ এর লছমনপুর অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে দিদির দূত হয়ে এলাকাবাসীর অভাব অভিযোগ শুনতে যান। তার সঙ্গে ছিলেন বাঁকুড়া জেলা সভাপতি দিব্যেন্দু সিংহ মহাপাত্র, ব্লক সভাপতি নিমাই মাজি, শালতোড়া বিধানসভার পরাজিত প্রার্থী সন্তোষ মন্ডল সহ একাধিক নেতা। এই কর্মসূচিতে তিনি গঙ্গাজলঘাঁটি দক্ষিণ চক্রের জেনাডি প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শনে যান। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাক্ষীগোপাল মন্ডল তার অফিসে তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করছিলেন। কথাপ্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক মালা রায়ের কাছে জানতে চান, দিদি আমাদের ডিএ কি অবস্থায় রয়েছে। একথা শুনেই নেত্রী মেজাজ হারিয়ে ফেলেন। মুহূর্ত খানেকের মধ্যে নিজেকে সংযত করে নিয়ে তিনি বলেন, এটা বিচারাধীন বিষয়। তারপরই তিনি শিক্ষক মশাইযের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি ব্যক্তিগত ডিএ’র কথা ভাবছেন। কিন্তু সরকার এই সব বাচ্চাদের কথা ভাবছেন, আপনারা যারা চাকরি করেন তারা মাসের শেষে মাইনে পান। কিন্তু যারা বেকার, লক্ষ লক্ষ মহিলা লক্ষ্মীর ভান্ডারের অপেক্ষায়, কন্যাশ্রী, স্কুলের বাচ্চাদের কথা ভাবছেন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি প্রধান শিক্ষককে বলেন ডিএ’র কথা না ভেবে বাচ্চাদের কথা ভাবুন।

এরপর তিনি বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে। জবাবে মালা রায় বলেন, উনি ডিএ নিয়ে যতটা চিন্তিত ততটা বাচ্চাদের জন্য নয়। মালা রায়ের অভিযোগ, আমি বাইরে থেকে গেস্ট হিসেবে এসেছি দিদির দূত হয়ে। তিনি আমাকে বসতে না বলে বা আতিথেয়তা না করে ডিএ’র কথা তুললেন। আসলে তিনি স্কুলের অব্যবস্থা ঢাকতে সব জেনেও ডিএ চাইলেন। দেখলাম ৪৫ জন বাচ্চা স্কুলে এসেছে। কিন্তু মিড ডে মিলের রান্না ৪৫ জনের হয়নি। বাচ্চারা জুতো, ইউনিফর্ম পরে আসেনি। এসব কি হচ্ছে আমরা নজর রাখছি। লোকাল নেতৃত্বকে বলে যাচ্ছি।

বিষয়টি নিয়ে প্রধান শিক্ষক সাক্ষীগোপাল মন্ডল বলেন, ডিএ প্রসঙ্গ গল্পের ছলেই তুলেছিলাম। এটা কি আমার অপরাধ। মিড ডে মিল পর্যাপ্ত ছিল। ওনারা আমার উপর মিথ্যা অভিযোগ করছেন।

এবিষয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডাঃ সুভাষ সরকার বলেন, মাস্টার মশাই কি অন্যায় করেছেন? দিদির দূতেরা তো অভাব অভিযোগই শুনতে এই কর্মসূচি নিয়েছেন। শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মালা রায়কে একহাত নিয়ে তিনি বলেন, এই নেত্রী তো শ্রমিক নেত্রী। ওদের একটা অভ্যাস আছে হুমকি দেওয়া। যে শিক্ষক জানতে চেয়েছেন তাকে উনি হুমকি দিতে পারেন না। উনি তো কারখানার শ্রমিক নয় যে হুমকি দেবেন শ্রমিককেও হুমকি দিতে পারেন না। সুভাষ সরকার বলেন, আসলে ওদের কাজটাই হল হুমকি দেওয়া, তোলা আদায় করা, চড় মারা। উনি তো বলতেই পারতেন সরকারের আর্থিক অবস্থা খারাপ। সরকারের সব দিকে নজর রয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর প্রশ্ন, উনি তা না করে একজন শিক্ষককে হুমকি দেন কোন অধিকারে? এখন এই প্রসঙ্গ তুলে আতঙ্কে ভুগছেন প্রধান শিক্ষক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *