রাজেন রায়, কলকাতা, ৮ নভেম্বর: দলে থেকেও শুভেন্দু যে ভাষায় নাম না করে বিভিন্ন রাজনৈতিক সভায় কথা বলছেন তাতে আগামী বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত তিনি তৃণমূলে থাকবেন কিনা, সে বিষয়ে জোর জল্পনা দেখা দিয়েছে। এমনকি তাকে বিজেপিতে যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। একাধিক তৃণমূল নেতা এককালে দলের পাশে থেকে তাকে শক্তিশালী করলেও মুকুল রায়ের মত মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপোর পথ প্রশস্ত করতে গিয়ে অনেকেই দলে যোগ্য সম্মান পায় না, এমন কথা আগেও বলেছেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী। এবার ফের তিনি বললেন, শুভেন্দুকে সরিয়ে ভাইপোর পথ প্রশস্ত করতে চাইছেন দিদি।
রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে শুভেন্দু অধিকারীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে রীতিমত সবাইকে তাক লাগিয়ে দিলেন অধীর। তিনি বলেন, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘প্রোমোট’ করার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দু অধিকারীকে ‘ছেঁটে’ ফেলতে চাইছেন।’ এর আগেও একাধিকবার শুভেন্দু ও ভাইপোর সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছে কিন্তু কখনও অধীর চৌধুরিকে তা নিয়ে বলতে শোনা যায়নি। কিন্তু এদিন রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ঘনীভূত হয়েছে। তাহলে কি বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দুর্বলতার সুযোগ কাজে লাগাতে যাচ্ছেন তিনি?
এ প্রসঙ্গে এদিন নিজেদের দ্বৈরথের কথা মেনে নিয়ে অধীর চৌধুরী জানান, ‘শুভেন্দু সঙ্গে আমার রাজনৈতিক বিরোধিতা ছিল থাকবে। তা নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু সত্যিটাকে মানতেই হবে। নন্দীগ্রামে গিয়ে শুভেন্দু কিভাবে আন্দোলন করেছে তা আমি দেখেছি। তা নিয়ে কোনও মিথ্যা কথা বলবো না।’
তিনি বলেন, ‘বাংলায় তৃণমূলের রাজনৈতিকভাবে শক্তিবৃদ্ধির পিছনে শুভেন্দু অধিকারীর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। নন্দীগ্রামের মানুষের অধিকারী পরিবারের প্রতি আস্থা রয়েছে। রাজনৈতিক পালাবদল ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থানের পিছনে সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রাম একটা বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করেছিল। আর সেখানে নন্দীগ্রামে সবথেকে বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী তথা অধিকারী পরিবার। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেখানে দেখা যায়নি।’ তিনি আরো বলেন, “আমাকে হারানোর জন্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দু অধিকারীকে মুর্শিদাবাদে নিয়োগ করেছিলেন। মুর্শিদাবাদ জেলায় এসে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে তাঁরা কংগ্রেসকে দুর্বল করার চেষ্টা করেছেন। আজ সবাই হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন যে ‘দিদি’ আসলে কী! শুভেন্দু কোথায় যাবেন আমি জানিবনা। কিন্তু উনি যে তৃণমূলের যোগ্য সম্মান পাননি তা স্পষ্ট।”