রাজেন রায়, কলকাতা, ১৭ নভেম্বর: রাজ্যে বিধানসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে ততই যেন শক্তি ক্ষয় হচ্ছে শাসকদল তৃণমূলের। শুভেন্দু অধিকারীর দলীয় অবস্থান নিয়ে চিন্তিত তৃণমূল নেতারা। এরমধ্যে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে রক্তচাপ বাড়িয়েছিলেন হুগলির হরিপালে বিধায়ক বেচারাম মান্না। আর সেই তালিকার সর্বশেষ সংযোজন কোচবিহার দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী। তাঁর কথা উস্কে দিয়েছে দলবদলের জল্পনাও।
মঙ্গলবার সকালে তাঁর ফেসবুক পোস্ট দেখে রীতিমতো বিস্মিত হয়ে যান দলের লোকজনই। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘আমার দল আর আমার নেত্রীর হাতে নেই, অর্থাৎ এই দল আর আমার নয়, হতে পারে না। তাই এই দলের সঙ্গে সমস্ত রকমের সম্পর্ক ছিন্ন করাটাই কি স্বাভাবিক নয়?’— সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এভাবেই জনসমক্ষে দলের প্রতি ক্ষোভ উগড়ে দিলেন কোচবিহার দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী। সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূল বিধায়কের এই পোস্ট ইতিমধ্যে ভাইরাল। আর তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। যদিও বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে নারাজ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
এদিন ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘বহুকাল পরে এবার এক নিস্প্রভ দীপাবলী দেখে মন বিষণ্ণ হয়েছিল। তেমনই ভেবে বিস্মিত হয়ে যাই, যে দলের অভিধানে ‘সম্মান’ বলে শব্দটিই অনুপস্থিত সেই দলে ২২টা বছর কাটিয়ে দিলাম! কী করে সম্ভব হল, কেন তা সম্ভব হল এসব প্রশ্ন উঠে আসে নিজের মনেই! উত্তর একটাই খুঁজে পাই, দিদি! দলের ভেতর অজস্র অপমান অবমাননা ক্রমাগত সহ্য করে গিয়েছি অকারণে, চুপ করে থাকার জন্য শুভানুধ্যায়ীরাও বিরক্ত হয়েছেন বারবার। কিন্তু আমার উত্তর একটাই ছিল, দিদি! যার উপর বিশ্বাস–আস্থাতেই এতদিন টিকেছিলাম।’
মিহির গোস্বামীর কথায়, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব মেনে দীর্ঘ ৩০ বছর অতিক্রম করার পর হঠাৎ বোধগম্য হয়েছে, এ দল এখন আর আমার দিদির দল নয়, দিদি এখানে নিস্পৃহ। তাই ‘দিদির লোক’ এখানে অপ্রয়োজনীয় ও গুরুত্বহীন।
এদিন মিহির গোস্বামী জানিয়েছেন, ‘সংগঠন থেকে আমার অব্যাহতি নেওয়ার ঘোষণা করার পর ৬ সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। এই ৪৩ দিনে আমি সব দলের কাছ থেকে এক বা একাধিক ফোন কল পেয়েছি, কথা বলেছি। কিন্তু গত ৬ সপ্তাহে খোদ নেত্রীর কাছ থেকে কোনও ফোন আসেনি। কোনও বরখাস্তনামা কিংবা বহিষ্কারের নির্দেশও আসেনি তাঁর কাছ থেকে।’ তাঁর মতে, এর থেকেই স্পষ্ট, দলের ক্ষমতা দলনেত্রীর হাতে নেই।