জে মাহাতো, মেদিনীপুর, ৭ ডিসেম্বর: আমফানের ত্রাণ বন্টন এবং করোনা নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রের দেওয়া টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এই প্রসঙ্গে মেদিনীপুরের সভা থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
করোনা ও আমফান প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্র এসবের হিসাব চাইছেl প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তুই কি টাকা দিয়েছিস যে হিসাব চাইছিস? জনগণকে আগে তুই হিসাব দে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন আমরা সব করবো আর ওরা চ্যাংড়ামো করে হিসাব চাইবেl বিভিন্ন এজেন্সি দিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে।
এই সভা থেকে তিনি আগাগোড়া বিজেপিকে আক্রমণ করেন। বেসরকারি করণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, খড়্গপুরে কারখানা অনেক আছেl সেগুলো আমাদের গর্ব। কিন্তু খড়্গপুরের আরেকটি গর্ব রেলকে বিক্রি করার চক্রান্ত হচ্ছে। আমরা রেল শ্রমিকদের পাশে রয়েছি। প্রতিরক্ষা দপ্তরের সেনারা লড়াই করে সেই দপ্তরও বেসরকারিকরণ করার চেষ্টা চলছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন আমরা লক্ষ্য করছি, বিজেপি কংগ্রেস সিপিএম এই তিন ভাই এক হয়েছেl অনেক নেতাকর্মী বিজেপিকে পছন্দ করছেন না। আমি তাদের সালাম জানাই। নন্দীগ্রাম, নেতাই, বেনাচাপড়া, সিঙ্গুর এর মত ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়ে সিপিএম এখন বিজেপিকে সমর্থন করছে অর্থাৎ রক্ষক ভক্ষক তক্ষক কিংবা অংকা কংকা ডঙ্কা সব এক হয়েছেl এইসব দল নাকি দেশ চালাবে। এরা দেশের জন্য কি করেছে? এরাই আবার বাংলা দখল করতে চাইছে। কিন্তু আমরা বাংলা দখল করতে দেব নাl মা-বোনেরা রাঁধেন এবং চুলও বাঁধেl তারা বিজেপিকে ঝাঁটা বটি নিয়ে তাড়া করবেl
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের কাছে খবর আছে বহিরাগতরা বাংলায় ঢুকে টাকা বিলি করছেl তাদের দিকে লক্ষ্য রাখতে প্রত্যেকটি ব্লক সভাপতিকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রীl তিনি বলেন, এই বহিরাগতদের কাছে কাছে মাথা নত করা যাবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন তৃণমূল যখন জন্ম নেয় তখন অনেকেই বলেছিলেন গরু ছাগলে খেয়ে যাবে কিন্তু আমি বলেছিলাম মাটিতে পেরেক পোতা যায় পাথরে পেরেক পোতা যায় নাl তৃণমূল পাথরের মত শক্ত দল, তৃণমূল বটবৃক্ষ, তৃণমূলকে আঁচড় দেওয়া যায় না এবং কখনো কিনতে পারবে না– এটা আমার চ্যালেঞ্জ।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অফিস গুলি থেকে নির্দেশ আসছে সেই মতো তারা কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেl মুখ্যমন্ত্রী উদাহরণ টেনে বলেন ধরুন আমি গুলি খেয়ে মরে গেলাম অফিসগুলো লিখতে বলবে যে করোনা হয়েছিল তাই মারা গেছেl
তিনি বলেন, বিজেপি যদি আমাদের দুর্বল মনে করে তাহলে এটা তাদের ভুল। তারা কখনোই তৃণমূলকে জব্দ করতে পারবে নাl আমরা ইতিমধ্যে দশ কোটি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি, এক কোটি সাইকেল দেওয়া হয়েছেl বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে রেশনl কিন্তু দিল্লি, বিহার ইত্যাদি রাজ্যে কি চলছে তা সবাই জানেl একটা মিথ্যা সরকার চলছেl
মুখ্যমন্ত্রী এনআরসি নিয়ে বিজেপির তীব্র সমালোচনা করেন তিনি বলেন হিন্দু মুসলমান ভেদাভেদ করে জাতিতে জাতিতে দাঙ্গা লাগিয়ে রাজনীতি করতে চাইছে, এটা হতে পারে না। বিজেপির টাকা এবং গুন্ডা থাকতে পারে কিন্তু তৃণমূলের মত একটাও কর্মী নেই, তৃণমূলের মত ঝান্ডা নেই, সোনার ধান নেইl আগামীকাল ব্লকে ব্লকে ধরনা হবে এরপর আগামী সপ্তাহে উত্তরবঙ্গে যাবl কর্মসংস্থানের চেষ্টা করা হচ্ছে রাজ্যেl