আমাদের ভারত, ৩১ জুলাই: কেরলের ভূমিধস নিয়ে বিজয়ন সরকারকে আগেই সতর্ক করেছিল কেন্দ্র। বুধবার রাজ্যসভায় এমনটাই দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল, তার প্রভাবে যে ধস নামতে পারে তা আগেই বোঝা গিয়েছিল। ধস নিয়ে অন্তত এক সপ্তাহ আগে সতর্ক করা হয়েছিল কেরল সরকারকে। এমন কি কেন্দ্র থেকে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর নয়টি দলকেও আগেভাগে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল কেরলে। কিন্তু এত কিছু করা সত্ত্বেও কেনো ব্যবস্থাই নেয়নি কেরল সরকার। যদিও বিপর্যয়ের সময় কেরলের পাশেই আছে কেন্দ্র বলে জানিয়েছেন অমিত শাহ। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র দাবি খারিজ করে দিয়েছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারায় বিজয়ন। তিনি জানিয়েছেন, ওয়ানাড়ে ধসের সম্ভাবনা নিয়ে কেন্দ্রীয় তরফে কেরলে কোনো সতর্ক বার্তা পাঠানো হয়নি।
বুধবার রাজ্যসভার অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সেখানে তিনি জানান, ওয়ানাড়ে এক সপ্তাহ আগে গত ২৩ জুলাই কেন্দ্র কেরলের কিনারায় বিজয়ন সরকারকে সতর্ক করেছিল। ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস জানিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলার নয়টি দল। কেরলে আগেভাগে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর নয়টি দলকে পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু কেরল সরকার সময় থাকতে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় সরানোর বন্দোবস্ত করেনি। সেটা হলে প্রাণহানি কিছুটা কমতো।
তিনি জানিয়েছেন, সারা বিশ্বে এমন চারটি দেশ রয়েছে যারা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের অন্তত এক সপ্তাহ আগে তা নিয়ে সতর্কতা জারি করতে পারে। তার মধ্যে ভারত অন্যতম। কেরলের ক্ষেত্রে এই সুবিধা নেওয়া যায়নি। এর পরেও কেরল সরকারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন অমিত শাহ। নরেন্দ্র মোদী সরকার কেরল সরকার এবং কেরলের মানুষের পাশে রয়েছে। প্রয়োজনীয় সব রকমের সাহায্য করা হবে।
কিন্তু পিনারাই বিজয়ন বলেছেন, কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের তরফে ভূমিধসের কোনো পূর্বাভাস দেওয়া হয়নি। শুধু ওয়ানাড় জেলায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা সংক্রান্ত কমলা সর্তকতার কথা জানানো হয়েছিল। কার্যক্ষেত্রে বৃষ্টিপাত হয়েছে ৫০০ মিলিমিটারের বেশি যা পূর্বাভাসের তুলনায় অনেক বেশি। তিনি আরও মন্তব্য করে মঙ্গলবার ভোরে ভূমি ধসের পরেই অবশ্য ওই জেলার জন্য একটি লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছিল।
এখনো পর্যন্ত ভূমি ধসের কারণে ওয়ানাড়ে ১৫৮ জনের বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন বহু মানুষ। এখনো বহুজন নিখোঁজ। জাতীয় রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশাপাশি সেনাও কেরলে উদ্ধার কাজে নেমেছে। প্রধানমন্ত্রী পরিস্থিতির উপর নিজে নজর রাখছেন। মৌসম ভবন জানিয়েছে, বৃষ্টি থামার তেমন সম্ভাবনা নেই। আপাতত বেশ কিছুদিন ভারি বৃষ্টি চলবে, ফলে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।