আমাদের ভারত, ব্যারাকপুর, ২৫ জুলাই: হাসপাতাল রয়েছে, কিন্তু নেই পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা। এই অভিযোগ দীর্ঘ দিন ধরে করছেন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। এই চিত্রটি ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের।
এনার এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে এক গুরুতর অভিযোগ আনলেন স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক পবন সিং। তাঁর অভিযোগ, চিকিৎসা পরিষেবা উন্নত মানের করতে তিনি তার বিধায়ক তহবিল থেকে প্রায় বছর খানেক আগে অর্থ বরাদ্দ করেছিলেন। উন্নত প্রযুক্তির ডিজিটাল এক্সরে মেশিন ও ইউ এস জি মেশিনের জন্য। সেই মত মেশিন দেওয়া হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু রোগীদের এই মেশিনগুলির পরিষেবার দরকার হলেও আজও ভাটপাড়া হাসপাতালে সেই মেশিনগুলি চালু হয়নি। অথচ আজও দেখা যাচ্ছে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বহু রোগীকে এক্সরে আর সোনোগ্রাফির জন্য অন্যত্র যেতে হচ্ছে। যেখানে অর্থের বিনিময়ে এই টেস্ট করাতে হচ্ছে। ফল স্বরূপ রোগী ও তাদের আত্মীয়দের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তারাও চাইছেন হাসপাতাটি যেখানে ভাটপাড়া ও জগদ্দলের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের চিকিৎসার একমাত্র সম্বল। সেখানে এই হাসপাতালে সব ধরনের চিকিৎসা পরিষেবা যেন তারা সহজে পান।
কেন চালু হচ্ছে না তাঁর দেওয়া যন্ত্রগুলি? সেই বিষয়ে জানতে ও সঠিক তথ্য নিতে এবার ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিজে গিয়ে উপস্থিত হলেন বিধায়ক পবন সিং। কথা বললেন হাসপাতালের সুপার মিজানুল ইসলামের সঙ্গে। বৈঠক সেরে বেরিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন বিধায়ক। তিনি এদিন অভিযোগ করে বলেন, তাঁর তহবিল থেকে ২৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল এই হাসপাতালের জন্য। রাজনীতির শিকার হচ্ছে তার কাজ, তাই তার বিধায়ক তহবিলের অর্থে আসা মেশিন চালু করছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এক্সরে মেশিন বসাতে যে ঘরের দরকার সেটি তৈরি হতে দেড় বছর লাগে না। তাই তাঁর আবেদন, মানুষের স্বার্থে সবটা দ্রুত করা হোক। আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিয়েই উদ্বোধন করা হোক। তিনি নিজে উদ্বোধন করতে আসবেন না। তিনি এদিন আরো বলেন, স্বাস্থ্য আর শিক্ষা এই দুটো বিভাগ মানুষের জন্য খুব দরকার, তাই এই দুটো ক্ষেত্রে রাজনীতি করা উচিত নয়, কিন্তু বর্তমানে সেটাই করা হচ্ছে। আমি হাত জোড় করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলছি, রাজনীতি করুন কিন্তু এই দুটি বিভাগকে ছেড়ে দিন।
যদিও হাসপাতালের সুপারের দাবি, পুরনো মেশিন দিয়ে এক্সরে করার কাজ চলছে, কিন্তু বিধায়কের দেওয়া মেশিনগুলির জন্য উপযুক্ত ঘর নেই, তাই চালু করা সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুত সেটা চালু করার চেষ্টা করা হচ্ছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরকে সবটা জানানো হয়েছে। ডিজিটাল এক্সরে মেশিনের জন্য যে ঘর দরকার সেখানে বেশ কিছু নতুন ব্যবস্থা দরকার, সেটা করতে বেশ কিছুটা সময় লাগছে। তবে চালু হবে ওই এক্সরে মেশিন। ব্যারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিকও আরো একটি ডিজিটাল এক্সরে মেশিন দেবেন বলেছে। আর এই হাসপাতালকে সুন্দর করে তৈরি করার কাজ চলছে।
অপর দিকে ভাটপাড়া পৌরসভার উপ পৌর প্রধান দেবজ্যোতি ঘোষ বলেন, বিধায়ক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মানসিকতা ও সদিচ্ছা নিয়ে যে প্রশ্ন তুলছেন সেটা সত্য নয়। বিধায়কের দেওয়া ইউ এস জি মেশিন কাজ করছে। কিন্তু কোনো মেশিন ইন্সটল করতে যে অর্থের দরকার সেটা বরাদ্দ হতেও সময় লাগে। সেই কারণে দেরি হচ্ছে।
তবে এই রাজনৈতিক তরজা তে সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়ছেন এই হাসপাতালে আগত রোগী ও রোগীর পরিবার।