Desh Mati Kalyan Mandir, গাছ কেটে নয়, গাছের পুজো করে পরিবেশ ও সংস্কৃতি রক্ষার বার্তা দিল দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির

আমাদের ভারত, বারাসাত, ২৫ ডিসেম্বর: আজ সকালে সারা দেশের সাথে তাল মিলিয়ে ‘দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির’-এর উদ্যোগে তুলসীপূজন ও তুলসী মাহাত্ম্য বর্ণন বিষয়ক একটি কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়েছিল প্রণব কন্যা সঙ্ঘের হৃদয়পুর (বারাসাত সন্নিহিত) কেন্দ্রে।

হিন্দুদের কাছে তুলসী অতি পবিত্র এবং অত্যন্ত উপকারী একটি উদ্ভিদ। গৃহের সব আয়োজনে, সব অনুষ্ঠানে তুলসীমঞ্চের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান লক্ষ্য করা যায়। ইদানীং এই ঐতিহ্যের বিষয়ে রাজ্যের মানুষ অনেকটাই উদাসীন। ফ্ল্যাটগুলোতে তুলসীমঞ্চ রাখার জায়গারও অভাব। লোক-ঔষধ হিসাবে তুলসীর ব্যবহার মানুষ ভুলে গেছে। হিন্দু সংস্কৃতির পুর্নজাগরণে গীতাপাঠ, গো-সেবা, গঙ্গারতি, গোবিন্দ আরাধনার মতোই তুলসীপূজনও এক অন্যতম পথ। সেই পথেই বছরভর তুলসীর চারা তৈরি, বিতরণ, রোপন ও পূজনের নানান প্রচেষ্টা চালিয়ে এসেছে দেশের মাটি। উৎসাহ দিয়েছে তুলসী সংক্রান্ত পুস্তক ও প্রবন্ধ রচনার ক্ষেত্রেও। এক দশক ধরে এই কাজ শুরু হয়েছে, ২০২৫ সালেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি।

আজ প্রণব কন্যা সঙ্ঘ-এর আশ্রম প্রাঙ্গণের তুলসী মঞ্চে দেশের মাটি কল্যাণ মন্দিরের পক্ষ থেকে তুলসী পূজন করা হয়। তুলসী মঞ্চ আলপনা দিয়ে সাজানো হয় এবং তুলসী গাছে জল দেওয়া হয়। তুলসী মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে পুজো করেন আশ্রমের আত্মস্থানন্দময়ী মাতাজী। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী স্নেহাংশু দত্ত। পুজোয় উপস্থিত ছিলেন দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির -এর সম্পাদক মিলন খামারিয়া, ট্রাস্টি মেম্বার অসীমলাল মুখার্জি, উপদেষ্টা ড: কল্যাণ চক্রবর্তী, বিশিষ্ট সাংবাদিক সুমনা মুখার্জি, দিলীপ বিশ্বাস, রূপালী বর্মণ, ছন্দা হালদার, তুবলী বালা, কবিতা বিশ্বাস, অমৃত বিশ্বাস, রাখী রায় ও আরও অনেকে।

তুলসীর মাহাত্ম্য গুণ ছোটো ছোটো পড়ুয়া এবং উপস্থিত সুধী জনের মধ্যে প্রচার করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে সবাই প্রসাদ গ্রহণ করেন।

আজকের অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে অধ্যাপক কল্যাণ চক্রবর্তী বলেন, তুলসী গাছের ভেষজ গুণ হাজার হাজার বছর ধরে পরীক্ষিত সত্য। তুলসী গাছ যেমন বাতাস বিশুদ্ধ করে তেমন তুলসী পুজো করার মাধ্যমে আমাদের সংস্কৃতি শুদ্ধি করার চেষ্টা চলছে। খ্রিষ্টানী সংস্কৃতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে তুলসী পুজো করুন ও নিজের সংস্কৃতি ও সভ্যতাকে বিশুদ্ধ করুন।

সম্পাদক মিলন খামারিয়া বলেন, আমরা গত চার বছর ধরে তুলসী পূজন দিবস পালন করছি। এবারও আমরা সারা বছর ধরে তুলসীর চারা বিতরণ করেছি, তুলসীর মাহাত্ম্য নিয়ে আলোচনা করেছি এবং ভারতীয় সংস্কৃতিতে তুলসী গাছের গুরুত্ব মানুষকে জানিয়েছি। আজ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে মানুষ তুলসী পুজোয় অংশগ্রহণ করেছেন। এটা আমাদের ভালো লাগছে যে বিদেশি সংস্কৃতির করাল গ্রাস থেকে মানুষ নিজেই মুক্তি চাইছে।

পাশাপাশি আজ প্রণব কন্যা সঙ্ঘের পাঁচদিন ব্যাপি ত্রিশূল উৎসবের শিক্ষা সম্মেলনে গুরুকুল শিক্ষা ব্যাবস্থার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সুচিন্তিত মতামত রাখেন দেশের মাটি কল্যাণ মন্দিরের উপদেষ্টা প্রফেসর কল্যাণ চক্রবর্তী এবং সম্পাদক মিলন খামারিয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *