পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৫ সেপ্টেম্বর: প্রকল্প মঞ্জুরের ৪৮ বছর পরও প্রকল্পটির পূর্ণাঙ্গ রূপায়ন না হওয়ায় চলতি বছরেও কোলাঘাট, পাঁশকুড়া ব্লকের বিস্তীর্ণ অংশের আমন ধানের চাষ নষ্ট হতে বসেছে। শুধু তাই নয়, এলাকার প্রধান অর্থকরী ফসল ফুল সহ নিচু এলাকার রাস্তাঘাটও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জল নিকাশীর অভাবে বেশ কিছু পুকুরও ইতিমধ্যে ডুবে গিয়েছে। অথচ এলাকা থেকে মাত্র ছ-সাত কিলোমিটার দূরেই কোলাঘাটের রূপনারায়ণ। কোলাঘাটের কাছে রূপনারায়ণের এখনো জলবহন করার যে ক্ষমতা রয়েছে, তাতে এলাকা জলমগ্ন হওয়ার কথা নয়। শুধুমাত্র জলনিকাশীর সুষ্ঠু বন্দোবস্ত না থাকায়, নিকাশী খালগুলি নিয়মিত পূর্ণ সংস্কার না হওয়ায় ও খালের ভেতরে যত্রতত্র অবৈধ কাঠামো এবং জলনিকাশী অবরুদ্ধ করে বেআইনি মাছের ভেড়ি গড়ে ওঠার কারণে এই বিপত্তি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
পাঁশকুড়া ব্লকের কেশাপাট, মাইশোরা, পাঁশকুড়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েত সহ কোলাঘাট ব্লকের বৃন্দাবনচক, সিদ্ধা-১ ও ২, খন্যাডিহি, সাগরবাড়, পুলশিটা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় শতাধিক মৌজার জলনিকাশী হয়ে থাকে, ৬ নম্বর (অধুনা ১৬ নম্বর) জাতীয় সড়কের ধার বরাবর সেচ দপ্তরের দেহাটি খাল দিয়ে। কিন্তু ওই বিস্তীর্ণ এলাকার তুলনায় খালটি ঠিকমত প্রশস্ত না হওয়ায় ফি বছর সাধারণ বর্ষণে এলাকার নিচু অংশের মৌজাগুলি জলমগ্ন হয়ে মাঠের ফসল, পুকুর, রাস্তাঘাট ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কৃষক সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে এলাকার বাসিন্দাদের দীর্ঘ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সেচ দপ্তর ১৯৭৫ সালে বরদাবাড় থেকে দেনান পর্যন্ত নূতন একটি খাল খনন করে (যা দেনান খাল নামে পরিচিত) তা দেহাটি খালের সাথে সংযুক্তির মাধ্যমে “দেনান-দেহাটি জলনিকাশী প্রকল্প” রূপায়ণের জন্য একটি প্রকল্প মঞ্জুর করে। কিন্তু আজও তা পূর্ণাঙ্গভাবে রূপায়িত না হওয়ায় দুই ব্লকের লক্ষাধিক মানুষ প্রতি বছর নানাভাবে সর্বস্বান্ত হচ্ছে।
পরিষদের সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক বলেন, দেহাটি খাল ও ওই মেন খালের সাথে যুক্ত চাপদা-গাজই সহ বিভিন্ন নিকাশী খাল মজে যাওয়ার কারণে এবং নতুন খনন করা দেনান খাল দিয়ে দেহাটি খালের উপরাংশের জল বের করার পরিকল্পনা কার্যকরী না হওয়ার ফলে প্রত্যেক বছর মানুষজনদের এই দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রতিকারের লক্ষে উপরোক্ত দাবিতে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর কোলাঘাট ব্লকের বিডিও অফিসে বিডিও এবং সেচ দপ্তরের আধিকারিকদের উপস্থিতিতে এক ডেপুটেশনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।