সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ৭ জুলাই:
আবাস যোজনার তালিকা নিয়ে কারচুপি ও অবিলম্বে তালিকা প্ৰকাশের দাবিতে মেজিয়ার রামচন্দ্ৰপুর পঞ্চায়েতে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখান গ্ৰামবাসীরা।
সম্প্রতি আবাস যোজনায় দুঃস্থ ও গৃহহীন মানুষদের জন্য একটি তালিকা প্রকাশিত হয়েছে বলে খবর আসে। কিন্তু তা প্রকাশ্যে না আসায় তাতে সন্দেহ দেখা যাচ্ছে যে প্রকৃত প্রাপকরা হয়তো তালিকায় নেই। অথচ যারা এই প্রকল্পের আওতায় আসার উপযুক্ত নয় তারাও তালিকাভুক্ত হয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে। তালিকা প্ৰকাশ না হওয়ায় সেই ধারণা আরও দৃঢ় হয়। সেই কারণেই মেজিয়া ব্লকের রামচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রশাসন আবাস যোজনায় উপভোক্তাদের নামের তালিকা টাঙাচ্ছে না। এই অভিযোগ তুলে বুধবার সকাল ১০ টায় পঞ্চায়েত অফিস খোলার সাথে সাথে ৩ জন কর্মী সহ পঞ্চায়েত অফিসের গেটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা।
তাদের দাবি, কারা আবাস যোজনায় বাড়ি করার টাকা পাচ্ছেন তার তালিকা প্রকাশ্যে টাঙাতে হবে। তাহলেই সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা তা দেখতে পাবেন। এজন্য পঞ্চায়েত অফিসের নোটিশ বোর্ডে সেই তালিকা টাঙানো উচিত। কিন্তু এই তালিকা স্বচ্ছ নয় বলে পঞ্চায়েত প্রশাসন টাঙাতে পারছে না বলে অভিযোগ করেন বিক্ষোভকারীরা। এই প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলেও তাদের অভিযোগ। বিক্ষোভকারীদের আরও অভিযোগ, শাসক দলের নেতারা ভুয়ো উপভোক্তা সাজিয়ে গতবারে যেমন কাটমানি আদায় করেছে এবারেও তেমনি স্বজনপোষণ এবং স্বচ্ছল ব্যক্তিদের নামেও বাড়ি করার জন্য নাম নথিভুক্ত হয়েছে দূর্নীতি করার জন্য। তাদের প্রশ্ন, যদি কোনও দুর্নীতি বা অস্বচ্ছতা না থাকে তাহলে কেন এত গোপনীয়তা?
বিক্ষোভকারী মঞ্জু চ্যাটার্জি বলেন, আমরা সক্রিয়ভাবে কোনও রাজনীতি করি না। কিন্তু ভোট তৃণমূলকেই দিয়ে আসছি বহু বছর ধরে। যখনই শুনলাম ঘরের টাকা এসেছে তখনই পঞ্চায়েতে এসে খোঁজ নিই। কিন্তু প্রধান দীর্ঘদিন অফিসে আসেন না। পঞ্চায়েত কর্মীদের আবাস যোজনায় উপভোক্তাদের তালিকার কথা জানতে চাইলে কোনও সদুত্তর মেলেনি। সেদিন যিনি অফিসে থাকেন না কৰ্মীরা তার নাম বলে এড়িয়ে যায়। তাই বাধ্য হয়ে আমরা পঞ্চায়েত অফিসে তালা দিয়েছি। লকডাউনের ফলে স্বল্প সংখ্যক কর্মী নিয়ে রোটেশন করে পঞ্চায়েত পরিষেবার কাজ চলছে। এদিন ৩ জন কর্মী ছাড়া বাকি কর্মীরা ঢুকতে পারেননি। শেষে মেজিয়া থানার পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ করতে বলে আশ্বাস দেন যে, সব প্রকাশ্যে আনার ব্যবস্থা হবে।
অপরদিকে পঞ্চায়েত প্রধান সুমিত্রা দাস গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শিকার। তিনি এ বিষয়ে মুখ খুলতে চান না। তাই তিনি অফিসে আসেন না। এর আগে দীর্ঘদিন অচলাবস্থা চলছিল এই পঞ্চায়েতে। জেলা প্রশাসনের মধ্যস্থতায় অচলাবস্থা কাটলেও দলীয় কোন্দল কাটেনি। বিডিও অনিরুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ওখানে কি হয়েছে জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।