আসন্ন কেন্দ্র ও রাজ্য বাজেটে অর্থ বরাদ্দের দাবি, প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটির

পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৭ জানুয়ারি: পশ্চিমবঙ্গের বহু প্রতিক্ষিত ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়নের ক্ষেত্রে অবিলম্বে কেন্দ্রের ইন্টার মিনিস্টিরিয়াল কমিটির ছাড়পত্র দিয়ে আসন্ন বাজেটে অর্থ বরাদ্দ এবং আগামী বর্ষার আগে কাজ শুরুর দাবি ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ন সংগ্রাম কমিটির। এই দাবিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় সরকারের জলশক্তিমন্ত্রকের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতের কাছে ই- মেইলে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

পাশাপাশি উপরোক্ত বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে বাধ্য করতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যাতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন এবং ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটির প্রতিনিধি সহ বিধানসভার একটি সর্বদলীয় টিম প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় জলশক্তিমন্ত্রকের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রীর কাছে পাঠানোর উদ্যোগ নেন, সে বিষয়েও আবেদন জানিয়ে আজ ই- মেইলে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ওই চিঠিতে রাজ্য সেচ দপ্তরের টাকায় আসন্ন রাজ্য বাজেটে অর্থ বরাদ্দ করে আগামী বর্ষার আগে শীলাবতীর নিম্নাংশ খনন করারও আবেদন জানানো হয়েছে।

ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক ও দেবাশীষ মাইতি বলেন, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ১৩টি ব্লকের প্রায় ১৬৫০ বর্গ কিলোমিটার এলাকার আনুমানিক ২০ লক্ষ অধিবাসীদের বাৎসরিক বন্যার হাত থেকে মুক্তি দিতে তৈরী ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান ২০১৫ সালে গঙ্গা বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশন (জি.এফ.সি.সি.) ও কেন্দ্রীয় সরকারের জলসম্পদ দপ্তরের ছাড়পত্র পায়। এরপর থেকে কেন্দ্র ও রাজ্য কোন সরকার এই মেগা প্রকল্পের জন্য কত শতাংশ টাকা দেবে তা নিয়ে চলছে দড়ি টানাটানি। প্রকল্পের জন্য ব্যয় ধরা হয়- আনুমানিক ১৭৪০ কোটি টাকা(২০১৭ সালের মূল্যসূচক অনুসারে)। প্রথম ধাপে কাজ হওয়ার কথা ছিল ১২১৪ কোটি ৯২ লক্ষ টাকার। ইতিমধ্যে প্রতি বছর বন্যা কিন্তু চলছেই। বরং বন্যার ভয়াবহতা বেড়েই চলেছে।

নারায়ণবাবু এক প্রশ্নের উত্তরে জানান, গত ২০২২ সালে প্রকল্পটি কেন্দ্রীয় সরকারের ফ্লাড ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ক্লিয়ারেন্স কমিটির ছাড়পত্র পাওয়ার পর কেন্দ্রীয় শাসক দলের নেতারা টাকা মঞ্জুর হয়ে গিয়েছে বলে ঘাটালে বিজয় সমাবেশ করে ফেললেন। যেখানে কেন্দ্রীয় অর্থ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরীও যোগ দিলেন। অন্যদিকে রাজ্যের শাসক দলও পিছিয়ে রইলেন না। বললেন, তারাও ইতিমধ্যে ৫০০ কোটি টাকা খরচ করে পলসপাই, দুর্বাচটী, ক্ষীরাই, বাক্সী, ক্ষীরাই-বাক্সী, নূতন কাঁসাইয়ের নিম্নাংশ, চন্দ্রেশ্বর প্রভৃতি নদী ও খাল সংস্কার করেছেন। অথচ এই সব প্রকল্পের জন্য কোনও সরকারের পক্ষ থেকেই কোনও টাকা মঞ্জুর করা
হয়নি। এই অবস্থায় আসন্ন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য বাজেটে অর্থ বরাদ্দ করে আগামী বর্ষার আগেই কাজ শুরুর দাবিতে আজ উভয় সরকারের কর্তাব্যক্তিদের এই চিঠি পাঠানো হয়েছে। এসব সত্ত্বেও যদি বাজেটে অর্থ বরাদ্দ না করা হয়, তাহলে কমিটি বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে বলে নারায়ণ চন্দ্র নায়ক হুঁশিয়ারি দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *