Body, Rampurhat, রামপুরহাটে আদিবাসী স্কুল ছাত্রীর প*চাগ*লা দে*হাং*শ উদ্ধার, গ্রেফতার শিক্ষক

আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, বীরভূম, ১৭ সেপ্টেম্বর: প্রায় ২০ দিন নিখোঁজ থাকার পর সপ্তম শ্রেণির এক আদিবাসী স্কুলছাত্রীর পচাগলা মৃতদেহের অর্ধেকাংশ উদ্ধার হলো। ওই ছাত্রীকে অপহরণ করে খুন করার অভিযোগ স্কুলেরই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়েছে বীররভূমের রামপুরহাট থানার বারমেসিয়া গ্রামে। তার ফাঁসির দাবিতে রামপুরহাট থানায় দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ চলে। পরে পুলিশের আশ্বাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন আদিবাসীরা।

মৃত ছাত্রী বীরভূমের রামপুরহাট থানার বারমেসিয়া গ্রামের বাসিন্দা। এলাকার শ্যামপাহাড়ি শ্রী রামকৃষ্ণ শিক্ষাপীঠে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত মেয়েটি। ছাত্রীটির পরিবারের অভিযোগ, ওই স্কুলের ভৌত বিজ্ঞানের শিক্ষক মনোজ কুমার পাল তাদের মেয়েকে অপহরণ করেছে ও পরে খুন করে তিন টুকরো করেছে। পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছে ছাত্রীটির পরিবার। তদন্তে নেমে ওই স্কুল শিক্ষককে পুলিশ ঘটনার পরদিনই আটক করে। শিক্ষকের বাড়ি পুরুলিয়ার রাঘুনাথপুরে। তুম্বুনি স্কুল লাগোয়া ভাড়া বাড়িতে থাকতেন তিনি।

মৃত ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৮ আগস্ট রামপুরহাটে টিউশন পড়তে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর বাড়ি ফেরেনি সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রী। পরিবারের তরফে রামপুরহাট থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল। মেয়েটির পরিবারের দাবি, পরে তারা জানতে পারেন স্কুলের ভৌত বিজ্ঞানের শিক্ষক মনোজ কুমার পাল তাদের মেয়েকে অপহরণ করেছে। এরপরেই ঘটনার পরদিন স্কুলে গিয়ে শিক্ষককে মারধর করেন পরিবারের লোকজন। খবর পেয়ে রামপুরহাট থানার পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ ভেঙে পড়েন শিক্ষক। তিনি মঙ্গলবার রাতে পুলিশকে ছাত্রীর হদিশ দেয় বলে সূত্রে জানা গিয়েছে। এরপরেই মঙ্গলবার রাতে রামপুরহাট থানার কালিডাঙ্গা গ্রামের কাছে সেচখাল থেকে ওই ছাত্রীর পচাগলা দু’টুকরো মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে দেহের কোমর থেকে নিচের অংশ এখনও পাওয়া যায়নি। মেয়েটির দু’টুকরো দেহ উদ্ধারের পর উত্তেজনা আরও বেড়ে গিয়েছে এলাকায়। পুলিশ ধৃত স্কুল শিক্ষককে দফায়-দফায় জেরা করছে। সেই সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে ছাত্রীটির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও।

ছাত্রীর দিদা নীলিমা বেসরা বলেন, “২৮ তারিখ বিকেলে মনোজ কুমার পাল নামে স্কুলের মাস্টার নাতনিকে ফুসলিয়ে প্রথমে ঝাড়খণ্ডের মলুটি নিয়ে যায়। পরে রামপুরহাটের দিকে যায়। এভাবে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে খুন করে। এরপর কালিডাঙ্গা সেচখালে কুইলা গ্রামের কাছে তাকে ফেলে দেয়। বুধবার খবর পেয়ে তার মৃতদেহ সনাক্ত করি। আমরা ওই শিক্ষকের ফাঁসি চাই।”

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, ধর্ষণের পর তাকে খুন করা হয়েছে। প্রমাণ লোপাট করতে দেহ তিন টুকরো করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে সেচখালে ফেলা হয়েছিল। বুধবার তাকে রামপুরহাট মহকুমা আদালতে তুলে ১৫ দিন হেফাজতে চেয়েছিল পুলিশ। বিচারক নয়দিন পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছে।

রামপুরহাট থানার আই সি সুকমল ঘোষ বলেন, “শিক্ষক যাতে জামিন না পায় সেই জন্য হাইকোর্ট থেকে আইনজীবী নিয়ে আসা হয়েছে। আমরাও চাই অভিযুক্ত শিক্ষকের ফাঁসি হোক।”

জেলা কংগ্রেস নেতা মিল্টন রশিদের দাবি, ওই শিক্ষক শাসক দলের শিক্ষা সেলের সদস্য ছিলেন। তাই পুলিশ ২০ দিন ধরে তাকে আটক করে দুধ ভাত খাইয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *