‘বামৈস্লামিক দুর্বৃত্তদের চেপে রাখা অনেক তথ্য জনসমক্ষে আনার একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে,’ ‘দি কাশ্মীর ফাইলস’ নিয়ে ফের সরব ‘হিন্দু সংহতি’-র প্রধান দেবতনু ভট্টাচার্য

অশোক সেনগুপ্ত
আমাদের ভারত, ১৯ মার্চ:
‘দি কাশ্মীর ফাইলস’ নিয়ে ফের সরব হলেন ‘হিন্দু সংহতি’-র সভাপতি দেবতনু ভট্টাচার্য। শনিবার তিনি সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “কাশ্মীর নিয়ে যে ন্যারেটিভ এতদিন শুধুমাত্র একটা ছোট সার্কেলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, কাশ্মীর ফাইল সেই ন্যারেটিভকে সীমা ছাড়িয়ে সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছে দিয়েছে।

এই সিনেমার বাণিজ্যিক সাফল্য আরও অনেককে এই মানসিকতার দর্শকদের আকৃষ্ট করবে। সিনেমা জগতে একটা নতুন ট্রেন্ড শুরু হওয়ার একটা সুযোগ এসেছে এটা হলফ করে বলা যায়।

হিন্দু যোদ্ধাদের কাছে অনেক ইনফরমেশন অব্যবহৃত অবস্থায় ডাম্প হয়ে আছে যেগুলোর সঠিক ব্যবহার হওয়ার একটা সুযোগ এসেছে। বামৈস্লামিক দুর্বৃত্তদের চেপে রাখা অনেক তথ্য জনসমক্ষে আনার একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে। দীর্ঘদিনের চেপে রাখা ইতিহাস উন্মোচিত হওয়ার সুযোগ এসেছে।

কম বাজেটের শর্ট ফিল্ম, ইউটিউব ভিডিও তৈরির জন্য অনেক ছোটখাট নির্মাতা উৎসাহিত হতে চলেছে।

বিবেক অগ্নিহোত্রী হলেন ইপক মেকার। তাঁর এই কাজ ভারতের হিন্দু আন্দোলনের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। হিন্দু জাতীয়তাবাদী আন্দোলন তার সীমা ছাড়ানোর দোরগোড়ায় এসে পৌঁছে গিয়েছে।

কিন্তু সুযোগ বারবার আসে না। আমাদের সন্তুষ্টিই হল সব থেকে বড় বাধা। আবহাওয়া অনুকূল হলেই হবে না, কৃষককে চাষটা সচেতনতার সাথে করতে হবে। তবেই ফসল ফলবে। গ্রাউন্ডে যারা কাজ করেন তাদের দায়িত্ব অনেকটাই বেড়ে গেল। মনে রাখবেন এয়ার সাপোর্ট যতই থাকুক, পদাতিক বাহিনীকেই জমির দখলটা নিতে হয়।”

এর আগে বৃহস্পতিবার তিনি ফেসবুকে লিখেছিলেন, “চোখের জলের বিনিময়ে হৃত সম্মান ফিরে পাওয়া যায় না। কাশ্মীর ফাইল সংক্রান্ত সিনেমাটি নিয়ে এখন হিন্দুত্ববাদীদের মধ্যে যে উৎসাহের পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তা লক্ষ্য করেই কিছু চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। জানি কিছুটা ছন্দপতন হবে এই পোস্টে। অনেকের মনে হবে এটা নেগেটিভ পোস্ট। কিন্তু মনের কথা শেয়ার না করে পারলাম না। মুসলমানদের উপরে আগ্রাসন, নিপীড়ন, অত্যাচারের কাহিনী শোনানো হয়, ভিডিও দেখানো হয় মুসলিম যুবকদের। সেই সব দেখে এবং শুনে তাদের মধ্যে যে প্রতিক্রিয়া হয় এবং কাশ্মীর ফাইলস এর মত সিনেমা দেখে হিন্দু যুবকদের মধ্যে যে প্রতিক্রিয়া হচ্ছে- এই দুটোর মধ্যে কি কোনও পার্থক্য আছে?

ফলশ্রুতিতে মুসলমানদের মধ্যে একটা অংশ তাদের উপরে ঘটে যাওয়া (তাদের চোখে) অন্যায়ের প্রতিকারের জন্য কিছু একটা করার সিদ্ধান্ত নেয়, তার জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে, মূল্য দিতে সংকল্পবদ্ধ হয়, এই সিনেমা দেখার পরে হিন্দুদের মধ্যেও সেরকম কিছু দেখা যাবে? নোয়াখালি থেকে অত্যাচারিত হয়ে পালিয়ে আসা হিন্দুদের উত্তরপুরুষেরা কাশ্মীরের হিন্দুদের উপর অত্যাচারের সিনেমা দেখে কিছু একটা বিহিত করার জন্য ঝুঁকি নেবে? ত্যাগ স্বীকার করবে? উপযুক্ত মূল্য দিতে তৈরী হবে?

কাশ্মীরের মুসলমানদের উপর (তাদের ভাষায়) ভারতীয়দের আগ্রাসনের প্রতিকারের লক্ষ্যে কাশ্মীরে কতজন যুবক বন্দুক ধরেছে, শহীদ হয়েছে? চূড়ান্ত অপমানিত, অত্যাচারিত, বিতাড়িত, মা-বোনের ধর্ষণের সাক্ষী হওয়ার পরেও কতজন কাশ্মীরী হিন্দু বন্দুকের জবাবে বন্দুক তুলে নিয়েছে? আত্মবলিদান দিয়েছে?

অনেকে বলছেন নোয়াখালি ফাইলস, চুকনগর ফাইলস ইত্যাদি সিনেমা তৈরি হোক। কেন? সবাইকে জানানোর জন্য? পরবর্তী প্রজন্মকে সচেতন করার জন্য? কী লাভ হবে? আমরা যারা এই সব ইতিহাস জানি, তাদের সংখ্যাও তো নেহাত কম নয়! আমরা কী করেছি? আমরা কী করছি? আমরা কী করবো? কোনও অ্যাকশন প্ল্যান আছে? আমার কাছেও সমাধান নেই, কিন্তু নিশ্চিত করে জানি, চোখের জলের বিনিময়ে হৃত সম্মান ফিরে পাওয়া যায় না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *