শেখ হাসিনার মন্তব্য ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে বিতর্ক

আমাদের ভারত, ১৬ অক্টোবর: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সতর্ক করেছেন বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতকেও সচেতন হতে হবে। তিনি বলেছেন, “সেখানেও (ভারতে) এমন কিছু যেন না করা হয় যার প্রভাব আমাদের দেশে এসে পড়ে, আর আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আঘাত আসে।”

খবরটি সম্প্রচারিত হয়েছে বিবিসি বাংলায়। তাতে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশের সরকারের উঁচু পর্যায় থেকে প্রকাশ্যে ভারতের অভ্যন্তরীণ স্পর্শকাতর কোনও বিষয় নিয়ে আপত্তি-অস্বস্তির কথা বলার নজির বিরল। সাধারণত এতোটা স্পষ্ট বার্তা আমরা ভারতকে দিই না, যদিও তারা অনেক কথা বলে। এমনকি ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির অত্যন্ত ক্ষমতাধর একজন ব্যক্তি নোংরা ভাষায় বাংলাদেশকে অপমানও করেছেন।“

খবরটি সামাজিক মাধ্যমে আসার পর বিতর্ক তৈরি হয়। বাংলাদেশেরই অনেকে শেখ হাসিনার মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন। প্রতিক্রিয়ায় সৈয়দ নাজমুল হুদা লিখেছেন, “আমার কেন যেন মনে হচ্ছে সরকার আগামী নির্বাচনে ভারতের কাছ থেকে একটু বেশি সুবিধা নিয়ে ক্ষমতায় যেতে চাচ্ছে, তাই সরকার ভারতকে বোঝাতে চাইছে অন্য দল ক্ষমতায় আসলে এই সাম্প্রদায়িক হামলা বা হিন্দু-ধর্মাবলম্বীদের উপর নির্যাতন বেড়ে যাবে। সর্বোপরি মনে হচ্ছে এ সকল হামলা পরিকল্পিত এবং এসকল হামলার পিছনে সরকারের হাত আছে।”

হাবিব ইসলাম লিখেছেন, “বিএনপির শাসনামলে ঘটিত ঘটনার বিষয়ে যদি বিএনপি দায়ী হয় তবে আওয়ামীলিগ শাসনামলে ঘটা প্রতিটি ঘটনার জন্য নৈতিকভাবে আওয়ামীলিগই দায়ী।” অঙ্কিত দাস লিখেছেন, “এক দিন বাংলাদেশ আফগানিস্তান হবে। আর সেখানে মানুষের বসবাসের অযোগ্য হবে। শুধু নরপশুরা একমাত্র সেখানে বসবাস করতে পারবে। আর ওরা শান্তির খোঁজে তালাশ করবে অমুসলিম ইউরোপের মত শান্তি প্রিয় দেশ।“

বিলাস রায় লিখেছেন, “অপরাধ যখন ধর্ম ও উৎস তখন আর কী বলার? আজকের বাংলাদেশে ধর্মই এখন প্রধান অস্ত্র। সেটা ক্ষমতার জন্যই হোক, হিংসার জন্যই হোক যে জন্যই হোক ধর্মের অপব্যবহারেই শেষ কথা। ধর্ম যখন শেষ কথা তখন তেলা মাথায় তেল দেবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তুু এটা স্বীকার না করে মানবিকতার কথা বলা, সাম্যর কথা বলা, সমান অধিকারের কথা বলা দৃষ্টিকটু ও অনেকাংশে ভন্ডামি। আর এই বাস্তবতায় অন্যায়ের বিচার চাওয়া ও পাওয়ার আশা করাটাও অন্যায়। আমি চাই না অন্যায়ের বিচার চেয়ে ও পাওয়ার আশা করে আর কোনও অন্যায় করতে….. সাবাশ বাংলাদেশ!”

সজল বিশ্বাস লিখেছেন, “নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে অন্য বিষয় নিয়ে আলোচনা, রাজনীতি ভালই করেন।” প্রদীপ রায় লিখেছেন, “অনেকটা সরিষা ক্ষেতে ভূত থাকার মত। নিজের দেশের নাগরিদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হন, আবার ভারত।”

বিবিসি-র ওই খবরে এটাও সম্প্রচারিত হয়েছে, “ভারতে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিস্তার নি:সন্দেহে আওয়ামী সরকারের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি করেছে। আপনি যদি দেখেন পাশের বাড়ি ধর্মীয় কট্টরপন্থার দিকে অগ্রসর হচ্ছে তাহলে উদ্বিগ্ন হওয়া স্বাভাবিক। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ যে চরিত্র ছিল তা এখন খুব কমই অবশিষ্ট রয়েছে”, বলেন তৌহিদ হোসেন যিনি কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নয় বছর ভারতে বসবাস করেছেন।”

তবে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সংশ্লিষ্ট বক্তব্যের সমর্থনেও সরব হয়েছেন ওদেশের নেটানাগরিকদের একটা বড় অংশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *