সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১২ মার্চ: বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতা তুঙ্গে। সব দলের নজর এখন ভোটার তালিকা নিয়ে। তালিকা যাচাই করতে গিয় নজরে আসছে জেলার বেশ কিছু বুথে মৃত ব্যক্তিদের নাম ভোটার তালিকায়, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে।
বিধানসভা নির্বাচনের আগেই সব রাজনৈতিক দল ভুয়ো ভোটার আটকাতে ময়দানে নেমে পড়েছে। মূলত ভোটার তালিকাই এখন সব দলের নজরে। ভোটার তালিকা যাচাই করতে গিয়েই মিলছে মৃত ভোটারদের নাম। সম্প্রতি বাঁকুড়া শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের গরাই পাড়ার ১৭২ নম্বর বুথে প্রায় ১৫ জন মৃত মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে সেখানকার ভোটার তালিকায়। বাঁকুড়া পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আজিজুল রহমান সেখানকার ভোটার তালিকায় এই মৃত ব্যক্তিদের উপস্থিতির কথা জানতে পারেন। সে খবর পেয়ে বাঁকুড়ার পুর প্রধান অলকা সেন মজুমদার সেখানে যান। এছাড়াও বাঁকুড়া-১ ব্লকের কুমিদ্যার ২৭০ নম্বর বুথের ভোটার তালিকায় ১৯ জন মৃত ব্যক্তির উপস্থিতি রয়েছে।বাঁকুড়া ২ নম্বর ব্লকের লাদনা ও কেন্দবনি গ্রামেও মৃত ব্যক্তিদের নাম রয়ে গেছে ভোটার তালিকায়। সেখানকার ভোটার তালিকায় ৩০ জন মৃতের উপস্থিতি রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এইসব অভিযোগ নিয়ে সরগরম জেলার রাজনৈতিক পরিবেশ।
শাসক দল তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য, জেলার ভোটার তালিকায় মৃতদের এত দাপাদাপি বামপন্থীদের জন্য। তাদের দাবি, সরকারি দফতরগুলিতে এখনও বামপন্থী কর্মীদের প্রভাব রয়েছে। সেই কর্মীরাই বিজেপির সঙ্গে যোগসাজস করে মৃতদের নাম ভোটার তালিকায় রেখে দিয়েছে।
এবিষয়ে বামেদের পাল্টা দাবি, বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের আঁতাতের কথা রাজ্যের মানুষ জানেন। ভোটে কারচুপি করার ক্ষেত্রে তৃণমূল সিদ্ধহস্ত তাও সকলের জানা। এখন নিজেদের ভাবমূর্তি উদ্ধার করতে ও প্রচারে আসতে তারা এই সব করছে। কিন্তু তাতে লাভ কিছু হবে না।
অন্যদিকে এবিষয়ে বিজেপির বক্তব্য, রাজ্য সরকারি কর্মীদের মাধ্যমেই ভোটার তালিকায় নাম সংযোজন-বিয়োজন করে থাকে। মৃত ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া না হয়ে থাকলে তার সম্পূর্ণ দায় রাজ্য প্রশাসনের ওপরেই বর্তায়।
অন্যদিকে এনিয়ে সাধারণ জেলাবাসীর বক্তব্য, স্বর্গ বা যমালয় থেকে মৃতরা ভোট দিতে আসেন না, তাহলে তাদের হয়ে কে বা কারা ভোট দিচ্ছেন? গ্রামবাসীদের আরও বক্তব্য, ভোটার তালিকায় থাকা মৃতদের কারও মৃত্যু হয়েছে ৫ বছর আগে, কারও আবার ১০ বছর আগে। পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য, ভোটারদের মৃত্যুর কথা গ্রাম পঞ্চায়েত সহ সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় জানানো হয়েছে। রেশন সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু, ভোটার তালিকায় দিব্যি বেঁচে রয়েছেন তারা। ভোটার তালিকায় তাদের নাম রয়ে গেছে আজও।