আমাদের ভারত, হাওড়া, ৩১ মার্চ: হাওড়া জেলা হাসপাতালে এবার করোনায় মৃত্যু হলো একজনের।
এই নিয়ে রাজ্যে মোট তিনজন মারা গেলেন। আক্রান্ত সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬। ওই রোগীকে সাধারণ ওয়ার্ডে রাখায় স্বাস্থ্য কর্মীরা বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, করোনা উপসর্গ রয়েছে এমন বহু রোগীকে সাধারণ ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। এই নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন তাঁরা।
জানাগেছে, রবিবার দুপুরে হাওড়া জেলা হাসপাতাল জ্বর ও কাশি নিয়ে ভর্তি হন এক ব্যক্তি। সোমবার বিকেলে তিনি মারা যান। ওই ব্যক্তির লালারস কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় এবং মৃতদেহটি পরীক্ষার রিপোর্ট আসা পর্যন্ত মর্গে রেখে দেওয়া হয়। রাতে পরীক্ষার রিপোর্টে জানা যায় ওই ব্যক্তির শরীরে করোনা পজিটিভ ছিল।
হাওড়ার বাসিন্দা হলেও ওই ব্যক্তি কর্মসূত্রে আলিপুরদুয়ারের থাকতেন। সম্প্রতি তিনি বাড়ি ফিরে এসেছেন। এরপরে তাঁর জ্বর এবং সর্দি, কাশি হয়। জানাগেছে, তিনি কর্মসূত্রে বিদেশেও অনেকবার গিয়েছিলেন। এই ঘটনা জানার পর হাসপাতালে নার্সরা গতকাল বিক্ষোভ দেখান, কারন বছর ৪৮ এর ওই ব্যক্তিকে সাধার ওয়ার্ডে রাখা হয়েছিল। পরে তাঁকে আবার ভেন্টিলেশনে রাখা হয় সাধারণ রোগীদের সঙ্গে। নার্সদের অভিযোগ, জ্বর সর্দি কাশি হয়েছে এবং বিদেশ ভ্রমণ করেছেন এমন রোগীকে কেন সাধারণ ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা হলো। অসুরক্ষিত অবস্থায় তাঁরা কাজ করতে নারাজ। সুপারের ঘরে স্বাস্থ্য কর্মীরা বিক্ষোভও দেখান।
সোমবার দুপুরে প্রায় ৭৫ জন নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মী হাসপাতালে সুপার নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়কে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। তাদের অভিযোগ, জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট নিয়ে বেশকিছু রোগী হাওড়া হাসপাতালে ভর্তি হলেও তাদের জেনারেল ওয়ার্ডে ভর্তি করা হচ্ছে। হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৩০টি বেড থাকা সত্ত্বেও সেখানে তাদের স্থানান্তরিত করা হচ্ছে না। এতে তারা যথেষ্ট আতঙ্কিত। তাদের আরও অভিযোগ, বাইরে থেকে আসা রোগীকে সরাসরি ভর্তি করা হচ্ছে জেনারেল ওয়ার্ডে। তাদের অভিযোগ, পি পি ই গ্লাভস এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে সরবরাহ করা হচ্ছে না। ফলে যেকোনো মুহূর্তে তারাও আক্রান্ত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন। এ নিয়ে তারা আতঙ্কে রয়েছেন বলে জানান। এর পাশাপাশি তারা জানিয়েছেন, অবিলম্বে হাসপাতালে সুপার যদি এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নেয় তাহলে তারা কাজ বন্ধের পথেই হাঁটবেন। যদিও এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে রাজি হননি হাওড়া হাসপাতালের সুপার নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়।